অ্যাড্রেনাল ক্রাইসিস এমনি একটি রোগ, যা যেকোনো সময় আপনার জন্য প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক অ্যাড্রেনাল ক্রাইসিস সম্পর্কে কিছু তথ্য—
অ্যাড্রেনাল ক্রাইসিস
যেকোনো স্ট্রেস, রোগবালাই, বাড়তি পরিশ্রমের সময় শরীর কিছু হরমোনের জোগান বাড়িয়ে দেয়। কারণ, এ সময় দরকার হয় বাড়তি অক্সিজেন, পুষ্টি এবং শক্তি। এ সময় অ্যাড্রেনাল নামক গ্রন্থি থেকে খুব প্রয়োজনীয় কিছু হরমোন নিঃসৃত হয়, যেমন গ্লুকোকর্টিকয়েড/কর্টিসল ও মিনারেলোকর্টিকয়েড। এ হরমোনগুলো দেহের রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়, নানান বিপাকক্রিয়ার মাধ্যমে রক্তের গ্লুকোজ বৃদ্ধি করে বাড়তি শক্তির জোগান দেয়, ঠিক রাখে শরীরে লবণের তারতম্য। ফলে সহজেই অসুস্থতা বা জরুরি অবস্থা মোকাবিলা করতে পারে দেহ। কিন্তু কোনো কারণে যদি অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি থেকে হরমোনগুলো যথাসময়ে ও যথাযথ পরিমাণে নিঃসৃত না হয়, তাহলে দেহে একটি জরুরি সমস্যার সৃষ্টি হয়। একেই বলে অ্যাড্রেনাল ক্রাইসিস, যা প্রাণঘাতী পর্যন্ত হতে পারে।
সতর্কতা
বিভিন্ন কারণে এ অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি বিকল হয়ে যেতে পারে, যেমন অটোইমিউন ডিজিজ, অ্যাড্রেনাল গ্রন্থির যক্ষ্মা বা টিবি, ম্যালিগনেন্সি বা অ্যামাইলয়েডোসিস বা গ্রন্থিতে রক্তক্ষরণ। আবার কেউ যদি কোনো রোগ যেমন বাতব্যথা, শাসকষ্ট বা চর্মরোগের কারণে দীর্ঘ সময় ধরে স্টেরয়েড–জাতীয় কোনো ওষুধ বা স্টেরয়েড আছে এমন হোমিওপ্যাথি বা হারবাল ওষুধ খেয়ে থাকেন, হঠাৎ সে ওষুধ সেবন বন্ধ করে দিলেও হতে পারে অ্যাড্রেনাল ক্রাইসিস।
উপসর্গ
অ্যাড্রেনাল ইনসাফিশিয়েন্সির প্রধান উপসর্গগুলো হলো অত্যধিক দুর্বলতা বা ক্লান্তিবোধ, খাবারে অরুচি, বমিভাব বা বমি, মাথা ঘোরা, ওজন কমে যাওয়া, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য এবং উচ্চ রক্তচাপ ও ব্লাড সুগার কমে যাওয়া। অ্যাড্রেনাল ক্রাইসিসে এ উপসর্গগুলোই আরও জটিলতর হয়। এ সময় প্রয়োজন দ্রুত রোগনির্ণয় এবং জরুরি চিকিৎসা। না হলে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে।কারও যদি কোনো রোগ বা কারণ ছাড়াই দুর্বলতা, ক্লান্তিবোধ, জ্বর, বমি বা ওজন হ্রাস ইত্যাদি উপসর্গ থাকে, তাদের অ্যাড্রেনাল ইনসাফিশিয়েন্সি আছে কি না, সে বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক।