বর্ষা মৌসুমে হঠাত্ই বৃষ্টি নামে। এই সময় বাইরে থাকলে বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া স্বাভাবিক ঘটনা। অনেক সময় বৃষ্টির পানি মাথায় পড়লে কিংবা শরীর ভিজে গেলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। সাধারণত বৃষ্টির পানি প্রাকৃতিক এবং নিরাপদ বলে বিবেচিত হয়। তবে পরিবেশগত দূষণ এবং অন্যান্য কারণে বৃষ্টির পানিও দূষিত হতে পারে। যা শরীরের সংস্পর্শে এলে ক্ষতিকর হয়ে উঠে। এছাড়াও যদি কেউ দীর্ঘ সময় ধরে বৃষ্টির পানিতে ভিজে থাকে, তবে শরীরে কিছু সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, বৃষ্টির পানি প্রাকৃতিকভাবে পরিশোধিত এবং প্রায়ই জীবাণুমুক্ত হয়, তবুও আধুনিক সময়ে দূষণের কারণে এর গুণমান অনেক কমে যেতে পারে। বৃষ্টির পানি যদি দূষিত হয়, তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বাতাসে থাকা বিভিন্ন দূষক যেমন ধূলিকণা, কার্বন ডাই অক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ বৃষ্টির পানিতে মিশে যেতে পারে। এই ধরনের দূষিত পানি ত্বকের সংস্পর্শে এলে চুলকানি, র্যাশ বা ত্বকের অন্যান্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে যাদের অ্যালার্জি রয়েছে তাদের এ ধরনের সমস্যা বেশি হয়।
বৃষ্টির পানিতে ভিজলে সর্দি, কাশি বা জ্বরের মতো সাধারণ অসুখও হতে পারে। কেউ দীর্ঘ সময় বৃষ্টিতে ভিজলে শরীরের তাপমাত্রা হ্রাস পায় এবং ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ঠান্ডা আবহাওয়ায় ভেজা পোশাক শরীরের তাপমাত্রা আরও কমিয়ে দিতে পারে। এতে ঠান্ডা লাগার সমস্যা থেকে শুরু করে হাইপোথার্মিয়ার মতো গুরুতর সমস্যারও কারণ হয়।
বিশেষজ্ঞরা আরও জানান, যারা বৃষ্টিতে ভিজে ভেজা কাপড় বেশি সময় ধরে শরীরে রাখেন তাদের গাঁটে ব্যথা বা আর্থ্রাইটিসের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ বৃষ্টির পানি শরীরের সংযোগস্থলে শীতলতা সৃষ্টি হয়, যা দীর্ঘমেয়াদে গাঁটে ব্যথা এবং আর্থ্রাইটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
বৃষ্টির পানি সরাসরি চোখের সংস্পর্শে এলেও সংক্রমণ হতে পারে। যারা কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করেন, তাদের ক্ষেত্রে এ ধরনের সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে। বৃষ্টির পানিতে মিশে থাকা দূষক এবং ব্যাকটেরিয়া চোখে সংক্রমণ সৃষ্টি করে। এতে চোখের লালচেভাব, চুলকানি বা ফোলাভাব হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, বৃষ্টিতে ভিজলে যত দ্রুত সম্ভব শুকনো পোশাক পরা এবং শরীর শুকিয়ে নেওয়া উচিত। চুল এবং ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার করে নেওয়া জরুরি।