এই গরমে চেটে চেটে আইসক্রিম খাওয়া অতি পরিচিত দৃশ্য। আট থেকে আশি—আইসক্রিম সবার ভালোবাসার নাম। এই গরমে আপনি সেই ভালোবাসাকে পেটে চালান করতেই পারেন, তবে তাতে শরীর-মন ঠান্ডা হয়ে যাবে, এ আশা করবেন না। শরীর ঠান্ডা তো হবেই না; বরং তাপমাত্রা আরও বেড়ে যাবে। আপনার আরও গরম লাগার অনুভূতি হবে।
নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে ইউনিভার্সিটি অব ক্যানসাসের ডায়েটিশিয়ান টাটা মার্শেলো জানান, ‘এই গরমে আর যা-ই হোক, কাউকে আইসক্রিম খাওয়ার কুবুদ্ধি দেবেন না। এটা আমাদের মুখে তাৎক্ষণিক ঠান্ডা লাগার অনুভূতি দিলেও আদতে আমাদের শরীর গরম করে।’ কীভাবে? এ প্রশ্নের উত্তরে টাটা জানান, আইসক্রিমে থাকা পূর্ণ ননির দুধ, ফ্যাট, শর্করা হজম করা পাকস্থলীর জন্য সহজ কাজ নয়। যত ধরনের খাদ্য উপাদান আছে, এর ভেতর ফ্যাট বা চর্বিজাতীয় খাবার ভাঙা শরীরের জন্য সবচেয়ে বেশি কষ্টসাধ্য। তাই ফ্যাট ভাঙতেই সবচেয়ে বেশি তাপ উৎপন্ন হয়।
গরমে আইসক্রিম খেলে আরও গরম লাগবে
ফ্যাট, প্রোটিন আর শর্করার সমন্বয়ে তৈরি আইসক্রিমের মতো অস্বাস্থ্যকর খাবার খুব কমই আছে। আইসক্রিম তৈরির উপাদানগুলো ভাঙতে গিয়ে যে পরিমাণ তাপ উৎপন্ন হয়, তা শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। গরমে অস্বস্তি, পেট ফাঁপা, বদহজমের জন্য গরমে আইসক্রিম খাওয়া দায়ী। আইসক্রিম সাময়িকভাবে যে ঠান্ডার অনুভূতি দেয়, তা পরিপাকক্রিয়া শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চলে যায়। ফলে এই গরমে সাময়িক মুখের স্বাদ আর ঠান্ডার অনুভূতির ফাঁদে পড়ে যদি আইসক্রিম খেয়েই ফেলেন, এর মূল্য আপনাকেই চোকাতে হবে। আইসক্রিম একান্তই খেতে হলে তাই শীতকালে খান। আর যদি শরীরের বাড়তি ওজন নিয়ে চিন্তিত থাকেন বা ডায়েটে থাকেন, তাহলে আইসক্রিম নামের এই খাবারের কথা আপাতত ভুলে যান।
কেবল আইসক্রিমই নয়, এই গরমে যেকোনো কোমল পানীয়, অতিরিক্ত চিনি আর বরফ দেওয়া পানীয় থেকে দূরে থাকুন। খেতেই যদি হয়, তবে লেবুর শরবত, ডাবের পানি, চিনি ছাড়া লাচ্ছি খেতে পারেন। পানি খাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। আর সেটি স্বাভাবিক তাপমাত্রার হলেই ভালো। দিনে দুবার বা তার বেশি গোসল করতে পারেন। তবে চুল ভেজা রাখলে চলবে না। গা ঘেমে গেলে পোশাক বদলে নিতে হবে। বাতাস চলাচল করতে পারে, এ রকম হালকা, সুতির আরামদায়ক পোশাক পরবেন।
সূত্র: নিউইয়র্ক পোস্ট