• ঢাকা
  • সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২, ৩০ শাওয়াল ১৪৪৬

যে ভিটামিনের অভাবে অলসতা বাড়ে


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৮, ২০২৫, ০৬:২৪ পিএম
যে ভিটামিনের অভাবে অলসতা বাড়ে
ছবি: সংগৃহীত

শরীর সুস্থ ও সচল রাখার জন্য বিভিন্ন ভিটামিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এমন কিছু ভিটামিন আছে, যার ঘাটতি হলে দেহে অলসতা, দুর্বলতা ও কর্মক্ষমতার ঘাটতি দেখা দেয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো ভিটামিন বি১২। এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে শরীরে শক্তির অভাব হয়, মনোযোগে ঘাটতি আসে এবং মানুষ খুব সহজেই ক্লান্ত বা অলসতা অনুভব করে।

ভিটামিন বি১২ মূলত রক্তকণিকা ও স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। এটি দেহে রক্তের লোহিত কণিকা তৈরিতে সহায়তা করে এবং নার্ভ সিস্টেমের কার্যকারিতা বজায় রাখে। যখন শরীরে এই ভিটামিনের অভাব হয়, তখন অক্সিজেন পরিবহনে বিঘ্ন ঘটে। ফলে পেশি ও মস্তিষ্ক পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায় না। এর ফলস্বরূপ শারীরিক দুর্বলতা, মানসিক ঝিমুনে ভাব এবং অলসতা বেড়ে যায়।

ভিটামিন বি১২ এর ঘাটতির কিছু সাধারণ লক্ষণের মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত ক্লান্তি, মনোযোগ কমে যাওয়া, বিষণ্ণতা অনুভব করা, স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যাওয়া, হাত-পা ঝিম ঝিম করা বা অবশ লাগা এবং শ্বাসকষ্ট অনুভব করা।

বিশেষজ্ঞরা জানান, যারা নিরামিষভোজী, অর্থাৎ যারা মাছ, মাংস, ডিম ইত্যাদি প্রাণিজ খাদ্য খান না, তাদের মধ্যে ভিটামিন বি১২ এর ঘাটতি হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। কারণ ভিটামিন বি১২ মূলত প্রাণিজ উৎস থেকেই পাওয়া যায়। তবে বাজারে এখন বি১২ সমৃদ্ধ ফোর্টিফায়েড খাদ্যপণ্য বা সাপ্লিমেন্টও পাওয়া যায়। যা এই ঘাটতি পূরণে সাহায্য করতে পারে।

ভিটামিন বি১২ ছাড়াও আরও কিছু ভিটামিনের অভাবে অলসতা বৃদ্ধি পায়। যেমন_
ভিটামিন ডি, সূর্যের আলো থেকে পাওয়া যায়। এর ঘাটতিতে ক্লান্তি, পেশি দুর্বলতা এবং বিষণ্ণতা দেখা দেয়। 
ভিটামিন সি, শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায় এবং শক্তি ধরে রাখতে সহায়তা করে। এর অভাবে অবসন্নতা বেড়ে যেতে পারে।
ফোলেট বা ভিটামিন বি৯, রক্তের সুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয়। এর অভাবে দুর্বলতা এবং অলসতা দেখা দিতে পারে।
তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে ভিটামিন বি১২। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন, যারা নিয়মিত কর্মক্ষম থাকতে চান, তাদের খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন বি১২ নিশ্চিত করা উচিত।

ভিটামিন বি১২ পাওয়া যায় গরুর মাংস, মুরগির মাংস, মাছ (বিশেষ করে সালমন ও টুনা), ডিম, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারে।

বয়স বাড়লে বা কিছু বিশেষ রোগের কারণে দেহের বি১২ শোষণ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। এছাড়া যাদের হজমসংক্রান্ত সমস্যা (যেমন গ্যাস্ট্রাইটিস, সেলিয়াক ডিজিজ) রয়েছে, তাদের মাঝেও বি১২ ঘাটতি দেখা যায়। তাই প্রয়োজনে রক্ত পরীক্ষা করে ভিটামিনের মাত্রা নির্ণয় করা এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা জরুরি।

অতিরিক্ত অলসতা, ক্লান্তি বা অস্বাভাবিক অবসন্নতা অনুভব করলে সেটিকে অবহেলা না করে সময়মতো ভিটামিনের ঘাটতি পরীক্ষা করা উচিত। কারণ, দীর্ঘমেয়াদে ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতি স্নায়ুর ক্ষতি, স্মৃতিভ্রংশ এবং অন্যান্য জটিল সমস্যার দিকে নিয়ে যেতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং প্রয়োজনে সাপ্লিমেন্টের মাধ্যমে এর ঘাটতি পূরণ করলে অলসতা কমে যাবে এবং আরও সক্রিয় ও প্রফুল্ল থাকা যাবে।

Link copied!