• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিশুর কান্নার ভাষা বোঝার উপায়


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২০, ২০২৩, ০৪:২১ পিএম
শিশুর কান্নার ভাষা বোঝার উপায়
শিশুকে কখনও একা যাবে না । ছবি : সংগৃহীত

মুখে কথা না বলা পর্যন্ত শিশুর একটাই ভাষা। তা হলো কান্না। অনেক সময় শিশু কান্না করলেই ছুটে যান মা অথবা বড়দের কেউ। কেন কাঁদছে তা বুঝতে না পেরে নিজেই হাত-পা ছড়িয়ে কাঁদতে বসে যান। দুঃশ্চিন্তা হতে থাকে। আসলে শিশুর কান্না বোঝা এতটাও কঠিন কিছু নয়। একটু খেয়াল করলেই বোঝা যায় কেন সে কাঁদছে। 

তাহলে জেনে নেওয়া যাক শিশুর কান্নার ভাষা বোঝার কয়েকটি উপায়-

ক্ষুধা পাওয়ার কান্না
যদি দেখেন শিশু খুব বেশি চিৎকার না করে একটানা কেঁদে যাচ্ছে, বারবার মুখে আঙুল দিচ্ছে বা হাত ঢোকাতে চাইছে, তা হলে বুঝবেন তার ক্ষুধা পেয়েছে। নিশ্চিত হবার জন্য আপনার আঙুল আলতো করে তার মুখের কাছে দিন। যদি সে আপনার আঙুল খেতে যায়, তা হলে সত্যিই তার ক্ষুধা পেয়েছে। তাই ক্ষুধা পাওয়ার আগেই শিশুকে নির্দিষ্ট সময়মতো খাইয়ে দিন।

শরীরে অস্বস্তি বা ব্যথা হলে
শিশুর শরীরে কোনও অস্বস্তি বা ব্যথা হলে চোখ- মুখ লাল করে প্রচণ্ড চিৎকার করে কাঁদতে থাকবে। কান্নার তীব্রতা বাড়তেই থাকে। অনেকসময় দেখা যায়, কাঁদতে কাঁদতে যেন শ্বাস আটকে যাচ্ছে, কান্না আটকে যাচ্ছে। এভাবে কাঁদলে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

পেটে ব্যথা বা গ্যাসের অস্বস্তি হলে
শিশুর পেটে যেকোনো ব্যথা বা গ্যাস হওয়ার ব্যথা খুবই সাধারণ। খাওয়ানোর পর যদি কাঁদতে শুরু করে, তাহলে হয়তো পেটে গ্যাসের ব্যথা হচ্ছে। এ সময় আলতো হাত দিয়ে পেটে, পিঠে চাপ দিয়ে ম্যাসাজ করে দিন যাতে গ্যাস বেরিয়ে যায়। 

প্রতিবার খাওয়ানোর পর তাকে কোলে নিয়ে আলতো করে পিঠ চাপড়ে চাপড়ে ঢেকুর তুলিয়ে দিন। পেট ভরে খাওয়ানোর সঙ্গে সঙ্গে কখনও শুইয়ে দেবেন না। আর যদি অন্য কোনও ব্যথাতে বেশি কষ্ট হয় এবং দিনে তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে কাঁদছে তাহলে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন।

আদর চাওয়ার কান্না
শিশুরা খুবই আদর পছন্দ করে। এবং সবচেয়ে বেশি উপভোগ করে মায়ের সান্নিধ্য। আপনি সামনে গেলেই  যদি সে ঘ্যানঘ্যান করতে শুরু করে, আপনি ওর কাছে না দাঁড়িয়ে ঘুরে ফিরে বেড়ালে কেঁদে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ওকে কোলে নিয়ে আদর করুন। এছাড়াও মা, বাবা বা বাড়ির অন্য কোনও প্রিয়জনের কাছে আদর পেলেই সে চুপ করে যাবে।

একাকীত্ব বোধের কান্না 
অবাক হলেও সত্য যে, শিশুরও একাকীত্ব বোধ হয়। সে সবসময় চায় যে তার সঙ্গে কেউ থাকুক, কথা বলুক, সঙ্গ দিক। অনেক সময় দেখা যায়, শিশুর ঘর থেকে সবাই চলে গেলে সে কাঁদতে শুরু করে। ঘরে কেউ তার কাছে এলেই সে চুপ হয়ে যায়। সুতরাং সে বড়দের মতো কথা বলতে না পারলেও কান্না দিয়েই তার অভিমান ব্যক্ত করে। তাই শিশুকে পর্যাপ্ত সময় দিন।

ঘুম পাওয়ার কান্না
যদি দেখেন যে, ঘ্যানঘ্যান করে কান্না করতে করতে হাই তোলে, চোখ কচলায়, তাহলে তাকে আদর করে ঘুম পাড়িয়ে দিন। ঘুম পেলেও সঠিক পরিবেশ সে পাচ্ছে না বা আরাম করে শুতে পারছে না, তাই কাঁদছে। চারদিক শান্ত করে তার নরম বিছানায় শুইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিন।

ডায়াপার ভেজা থাকলে কান্না
অনেক শিশু ডায়াপার ভিজে গেলে অস্বস্তিতে কাঁদতে শুরু করে। এমনিতেও কখনওই শিশুকে ভেজা ডায়াপার পরিয়ে ফেলে রাখা উচিত নয়। এতে র‍্যাশ বা ত্বকে জ্বালা হতে পারে। সময়ের আগেই তার ডায়াপার বদলে দিন। শিশু বিরক্ত হয়ে কাঁদলে, ডায়াপার বদলাতে হবে কি না সেটি সবার আগে দেখে নিন।

সাধারণত, যেসব কাজ করলে শিশু কান্না থামিয়ে শান্ত হয়ে যায়, সেসব করার পরও যদি ক্রমাগত কাঁদতে থাকে, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। 

Link copied!