ভোজনরসিকরা জানেন কি, পৃথিবীতে সবচেয়ে দামি খাবার কোনটি? ভাত, মাছ, মাংস কিংবা সবজিজাতীয় কোনো খাবার নয়। বরং পৃথিবীর সবচেয়ে দামি খাবার হচ্ছে একটি বিশেষ ধরনের ডিম! ডিমের দাম এখন বাজার চড়া। ডজন ডিম কিনতে এখন অনেকে টাকাই গুণতে হয়। এতেই নিরাশ হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। কিন্তু জানেন কি, পৃথিবীতে এমনও ডিম রয়েছে যার এক কেজি কিনতে মানুষের বছরের উপার্জন খরচ হয়ে যাবে। তাই এটি এখন পৃথিবীর সবচেয়ে দামি খাবার হিসেবে পরিচিত।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে দামি খাবার হলো আলমাস ক্যাভিয়ার। সাধারণ মাছের ডিমকে অনেকে ক্যাভিয়ার বলে ভুল করে, কিন্তু তা নয়। বিরল প্রজাতির মাছের ডিম্বাশয় থেকে আহরিত ডিমকেই ক্যাভিয়ার বলে। এই ডিম স্থলভাগে পাওয়া যায় না। সমুদ্রের ভেতর থেকে বের করে আনা হয়। যা শুধুমাত্র কয়েকটি জায়গায় পাওয়া যায়। এ কারণেই এর দাম অনেক বেশি হয়। এই বিশেষ ডিম স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত উপকারী।
পৃথিবীতে অনেক ধরণের ক্যাভিয়ার রয়েছে। এর মধ্যে আলমাস ক্যাভিয়ারকে সবচেয়ে ব্যয়বহুল এবং বিরল বলে মনে করা হয়। ইরানের অ্যালবিনো স্টার্জন মাছের ডিম্বাশয় থেকে আলমাস ক্যাভিয়ার বের করা হয়। এই মাছের বয়স ৬০ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে। এদের রং কালো হয়। যার কারণে এদের ‘কালো সোনা’ বলা হয়। বর্তমান সময়ে অ্যালবিনো স্টার্জন মাছ কয়েক কোটি টাকায় নিলামে বিক্রি হচ্ছে।
ক্যাভিয়ার স্বাস্থ্যের জন্যও খুব উপকারী। ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের প্রতিবেদনে জানা যায়, আলমাস ক্যাভিয়ার ভিটামিন বি ১২, ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন এবং ক্যালসিয়ামসহ নানা পুষ্টিতে সমৃদ্ধ। আলমাস ক্যাভিয়ারে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। যা হার্ট ও মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারী। এতে উচ্চ মানের প্রোটিনও রয়েছে, যা শরীরের পেশীর জন্য ভালো। এছাড়াও ক্যাভিয়ারে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরকে বিপজ্জনক ফ্রি র্যাডিক্যাল থেকে রক্ষা করে এবং বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ধীর করে।
ক্যাভিয়ার উপস্থিত পুষ্টি শরীরে শক্তি বজায় রাখে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। গবেষকরা জানান, আলমাস ক্যাভিয়ার মানুষের স্মৃতিশক্তিকে তীক্ষ্ণ করে। ত্বকের উন্নতি করে। তাই বিশেষ এই ডিমটির মূল্য অনেক।