ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর- এ কথা সবার জানা। তবুও অভ্যাস কি আর বাদ দেওয়া সহজ! প্রতিদিনই তিন বেলা কয়েকবার ধূমপান করেন এমন অনেকেই রয়েছেন। তাদের স্বাস্থ্যের অবস্থাও খারাপের দিকে যেতে থাকে। অতিরিক্ত ধূমপানে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা হয়।
বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে, সিগারেটে নিকোতিন থাকে। যা ফুসফুসকে পুড়িয়ে দেয়। সিগারেটের ধোঁয়ায় বেঞ্জিন, আর্সেনিক, ফর্মালডিহাইডের মতো কমপক্ষে পাঁচ হাজার রাসায়নিক উৎপন্ন হয়। যা শরীরে প্রবেশ করে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি হয়। অথচ এই ক্ষতির ধরণ সম্পর্কে ধূমপায়ীর কোনো ধারণাই থাকে না। তাই অবহেলায় স্বাস্থ্যের আরও ক্ষতি হয়।
চিকিৎসকরা জানান, ধূমপানের কারণে শরীরে ক্ষতি হবেই। এই ক্ষতি আগে নিশ্চিত করার জন্য নিয়মিত পরীক্ষা করানো উচিত। তাই কয়েকটি শারীরিক পরীক্ষা করা জরুরি। যেমন_
ধূমপানে ফুসফুসের ক্ষতি হয়। তাই স্পাইরোমেট্রি পরীক্ষা করানো ভালো। এতে ফুসফুসের অবস্থা বোঝা যায়। ধূমপায়ীদের শুকনো কাশি হয়। এই পরীক্ষা করলে ফুসফুসে কোনো সংক্রমণ আছে কিনা তা বোঝা যাবে।
‘ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ’ বা সিওপিডি হতে পারে কিনা, তাও ধরা পড়বে। প্রতিদিন অন্তত ১০টা সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস থাকলে সিওপিডিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। শুরুতে কাশি ও অল্প শ্বাসকষ্ট হয়। নিঃশ্বাসের কষ্ট হয়।
ধূমপায়ীদের বুকের অবস্থাও নিয়মিত পরীক্ষা করানো উচিত। বুকের এক্স-রে করে নিতে হবে। এতে নিউমোনিয়া ও শ্বাসনালির সংক্রমণজনিত সমস্যা থাকলে তা ধরা পড়বে। ধূমপান করলে ফুসফুসে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকিও থাকে। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা, সিওপিডি, ব্রঙ্কাইটিসের উপসর্গ থাকলে বুকে এক্স-রে করলেই ধরা পড়ে।
ধূমপায়ীদের সিটি স্ক্যান করাও জরুরি। এতে বোঝা যাবে ফুসফুসের টিউমার বাসা বেধেছে কিনা। ফুসফুসের ক্ষত সহজেই ধরা পড়বে সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে।
ধূমপায়ীদের ইলেকট্রোকার্ডিয়োগ্রাম (ইসিজি) করে নেওয়া জরুরি। যারা দীর্ঘ সময় ধরে ধূমপান করেন তাদের নিয়মিত ইসিজি করে নিতে হবে। এতে হার্টের অবস্থা বোঝা যাবে। হৃদস্পন্দনের অবস্থা কেমন কিংবা ধমনীতে রক্ত জমাট বাধছে কিনা তাও জানা যাবে।