বাজারে যেসব সব্জি পাওয়া যায় তার প্রত্যেকেরই তো কিছু না কিছু পুষ্টিগুণ আছে। তবে গ্রীষ্মকালীন সবজি বিশেষ করে পটল অনেকেরই পছন্দ নয়। কিন্তু এই অত্যধিক গরমে শরীর সুস্থ রাখতে গেলে সবজিই ভরসা। তবে পুষ্টিবিদেরা বলছেন পটল বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত। কারণ বিভিন্ন রকম ভিটামিন এবং খনিজে ভরপুর পটল একাধিক শারীরিক সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। আসুন জেনে নেওয়া যাক পটলের উপকারিতাগুলো।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে
পটলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। ফলে পটল যেমন এক দিকে অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে পারে, তেমনই অন্য দিকে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও সাহায্য করে।
সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে
পটলের মধ্যে উচ্চ পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। এই ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। টাইপ-২ ডায়াবেটিসে ভুগলে পটল খেতে পারেন।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে
পটলে ভিটামিন এ, বি১, বি২, সি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামের মতো উপাদান রয়েছে। ভিটামিন সি এক দিকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং অন্য দিকে জারণ প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট বিভিন্ন ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিকেলের ক্রিয়া থেকে দেহকে রক্ষা করতেও সাহায্য করে। বিশেষত মরসুম বদলের সময়ে হওয়া সর্দি-জ্বর প্রতিরোধ করতে কাজে আসতে পারে পটল। লিভারের সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের জন্যও পটল বেশ উপকারী।
ওজন নিয়ন্ত্রণে
এই সবজির মধ্যে ক্যালোরি নেই বললেই চলে। ১০০ গ্রাম পটলে মাত্র ২০ ক্যালোরি থাকে। ফলত যারা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন তাদের জন্য পটল একটি ভাল বিকল্প হতে আবার পটলে যে ফাইবার পাওয়া যায়, তা পাচিত হতে দীর্ঘক্ষণ সময় লাগে। ফলে দীর্ঘক্ষণ খিদে পায় না।
রক্ত পরিষ্কার করে
শরীরকে জটিল রোগ-ব্যাধি থেকে বাঁচাতে গেলে রক্ত পরিশোধন করা খুব জরুরি। পটল রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। ফলে অনেক ধরনের গুরুতর রোগ থেকে শরীর সুরক্ষিত থাকে।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে
পটল রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল কমাতে ও ভাল কোলেস্টেরল বা এইচডিএল বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ফলে হৃদ্যন্ত্র ভাল থাকে। কমে স্ট্রোকের ঝুঁকি।
ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে
পটল এবং পটলের বীজ ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য বেশ উপযোগী। পটলে ফ্ল্যাভিনয়েড জাতীয় উপাদান থাকে, থাকে কপার, পটাশিয়াম ম্যাগনেশিয়াম। এই উপাদানগুলি রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকর।
ত্বকের সমস্যায়
শুষ্ক ত্বকের সমস্যা, র্যাশ, চুলকানি বা এগজ়িমার মতো সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে পটল। এতে ভিটামিন এ এবং সি রয়েছে। এই দুই পুষ্টি ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে এমনকি, চটজলদি কাটা-ছড়ার ক্ষত সারাতেও দারুণ কাজ করে পটল। তাই খেলতে বা দৌড়তে গিয়ে কোথাও কেটে গেলে তা শুকোতে সাহায্য করে পটল।
আয়নের মাত্রা বৃদ্ধি করে
প্রতিটি পটলের মধ্যে থাকে ১.৪ গ্রাম আয়রন যা শরীর থেকে রক্ত স্বল্পতার সমস্যা দূর করে দেয়।
সংক্রমণজনিত সমস্যার সমাধানে
ঠান্ডা লাগা, সংক্রমণজনিত সর্দি-কাশি কিংবা হাঁচির মতো শারীরিক সমস্যা দূরে থাকে পটল খেলে। তাই মরসুমি সব্জি যেমন খাবেন, তেমন পটলকেও সারা বছরের সঙ্গী করে নিন।