প্রচণ্ড গরম বাড়ছে। অসয্য এই গরমে অনেকের বাসায় এসি নেই। ফ্যানের বাতাসেও থাকছে গরম হাওয়া। বিছানায় গা ঘেঁষাতেই যেন ঘামে ভিজে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে মেঝেতে ঘুমাচ্ছেন অনেকে। মেঝেতে ঘুমালে যেন কিছুটা হলেও প্রশান্তি পাওয়া যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই আরামের ঘুম চলে আসে।
বর্তমান সময়ে সুন্দর খাট আর ম্যাট্রেস পাওয়া যায়। তাই মেঝেতে ঘুমানোর অভ্যাস অনেকেরই নেই। তবে আগের দিনে মেঝেতেই ঘুমানোর চল ছিল। মেঝেতে পাটি বিছিয়ে এর উপর চাদর পেতে ঘুমাতেন। ওই সময় মেঝেতে প্রশান্তির ঘুম হতো। দিন বদলের সঙ্গে বিছানা আরামদায়ক হয়েছে। তবে আরামদায়ক বিছানায় ঘুমালে স্বাস্থ্যের খুব একটা উপকার হচ্ছে না। বরং মেঝেতে ঘুমালেই উপকার পাওয়া যায় বেশি।
বিশেষজ্ঞরা জানান, মাটি কিংবা ঘরের মেঝেতে ঘুমানো বেশ স্বাস্থ্যকর। এতে বিভিন্ন রোগ সেরে উঠে। এই অভ্যাস থাকলে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়। যেমন:
মেরুদণ্ড সোজা হয়
অনেকেরই ঘুম থেকে উঠলে মেরুদণ্ড ব্যথা করে। কিন্তু মেঝেতে ঘুমালে মেরুদণ্ড সোজা হয়ে থাকায় কোনো ব্যথা হয় না। যাদের পিঠে ব্যথা ও কোমর ব্যথা রয়েছে, তারা মেঝেতে ঘুমালে আরাম পাবেন। মেরুদণ্ড সোজা হয়ে থাকায় শরীরের অনেক ব্যথাই কমে যাবে।
ঘাড়ের ব্যথা
ঘুম থেকে উঠলে ঘাড় ও পিঠে ব্যথা হতে পারে। ঘুমের সময় আঁকাবাঁকা হয়ে ঘুমালে এবং ঘাড় সোজা করে না রাখলে এমন ব্যথা হয়। মেঝেতে ঘুমালে এই ব্যথা কমে যাবে। কারণ মেঝেতে ঘুমের সময় ঘাড় ও পিঠ সোজা থাকে। তাই ব্যথা হয় না।
রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়
মেঝেতে ঘুমালে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। যা সুস্থ থাকার জন্য জরুরি। মেঝেতে ঘুমের সময় শরীর যে অবস্থানে থাকে তাতে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। তাই শরীরের অনেক রোগই ভালো হয়ে যায়।
ঘুমের সমস্যা হয় না
বর্তমান সময়ে অনেকেই অনিদ্রায় ভোগেন। যতই আরামদায়ক বিছানা হোক ঘুম যেন আসেই না। আগের দিনে এমন সমস্যা খুব কমই হতো। মাটিতে বিছানা করে শুলেই যেন ঘুমিয়ে যেতেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেঝেতে ঘুমানোর অভ্যাস করলে অনিদ্রাও দূর হবে। গরমে আরাম মিলবে। তাই ভালো ঘুম হবে। শরীরে ঘামও কম হবে।
মেঝেতে ঘুমানো যেমন স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে, তেমনি রয়েছে স্বাস্থ্য অপকারিতাও। মেঝেতে ঘুমানোর আগে কিছু বিষয়ে সতর্কও থাকতে হবে। যেমন_
· মেঝেতে ঘুমালে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। যাদের খুব তাড়াতাড়ি ঠান্ডা লেগে যায় তারা মেঝেতে না ঘুমানোই ভালো। এতে গরমেও সর্দি-কাশি হতে পারে।
· মেঝেতে ঘুমালে শরীরের তাপ দ্রুত কমে যায়। তাই শীত অনুভূত হতে পারে। যারা এমনটা সহ্য করতে পারেন না তারা মেঝেতে না ঘুমানোই ভালো হবে।
· মেঝেতে বেশি ধুলোবালি থাকে। কার্পেটের ওপর ঘুমালে ধুলাবালি আরও বেশি থাকবে। যা থেকে অ্যালার্জির সমস্যা বাড়বে। তাই যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে তারা মেঝেতে ঘুমাবেন না। কারণ অ্যালার্জি বাড়লে হাঁচি, সর্দি, চুলকানি, চোখ লাল হওয়া, শ্বাসকষ্ট ও কাশির মতো সমস্যা বেড়ে যাবে।
সূত্র: স্লিপ ফাউন্ডেশন