বসন্ত ঋতু মানেই রঙিন ফুলের বাহার, মৃদু বাতাস, আর বসন্ত উৎসবের আনন্দ। কিন্তু এই মনোরম ঋতুর সঙ্গে আসে কিছু অসুখ-বিসুখও। যা অনেক সময় বিপজ্জনক হতে পারে। বসন্তকালীন রোগের মধ্যে অন্যতম হলো জলবসন্ত, হাম, ইনফ্লুয়েঞ্জা, অ্যালার্জি এবং সর্দি-কাশি। এসব রোগ থেকে বাঁচতে সচেতনতা এবং প্রয়োজনীয় প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।
জলবসন্ত
জলবসন্ত বা চিকেনপক্স একটি ভাইরাসজনিত সংক্রমণ যা মূলত ভ্যারিসেলা-জোস্টার ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে। এটি অত্যন্ত সংক্রামক এবং বায়ুবাহিত কণার মাধ্যমে ছড়ায়। এই রোগ হলে শরীরে ফুসকুড়ি, চুলকানি, জ্বর, দুর্বলতা এবং মাথাব্যথা দেখা যায়।
এই রোগ প্রতিরোধে জলবসন্তের টিকা (ভ্যারিসেলা টিকা) গ্রহণ করা উচিত। এছাড়াও আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা জরুরি। সেই সঙ্গে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বজায় রাখাও জরুরি।
হাম
হাম একটি ভাইরাসজনিত রোগ। যা শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এটি হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। হামের লক্ষণগুলোর মধ্যে জ্বর, শরীরের বিভিন্ন স্থানে লালচে ফুসকুড়ি, কাশি, চোখের লালভাব এবং দুর্বলতা। হাম প্রতিরোধে হাম-রুবেলা (MR) টিকা শিশুকালে গ্রহণ করা উচিত। আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা
বসন্তকালে তাপমাত্রার পরিবর্তনের কারণে ফ্লুর প্রকোপ বাড়ে। ফ্লু হলে প্রচণ্ড জ্বর, সর্দি, গলা ব্যথা, শরীর ব্যথা, দুর্বলতা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। ছোটদের অবশ্যই ফ্লু টিকা গ্রহণ করতে হবে। প্রচুর পানি পান করতে হবে এবং পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে।
বসন্তকালীন অ্যালার্জি
বসন্তকালে বাতাসে প্রচুর পরাগরেণু ছড়িয়ে পড়ে। যা অনেকের অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। ফলে হাঁচি, চোখ চুলকানো, নাক দিয়ে পানি পড়া, ত্বকের র্যাশ ইত্যাদি হতে পারে। অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ঘরের জানালা-দরজা বন্ধ রাখা এবং ঘন ঘন পরিষ্কার করা দরকার। বাইরের ধুলাবালি এড়াতে মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে।
সাধারণ সর্দি-কাশি ও প্রতিরোধ
বসন্তের আবহাওয়ার পরিবর্তনজনিত কারণে ঠান্ডা লাগা, গলা ব্যথা, সর্দি-কাশির প্রকোপ বেড়ে যায়। এই সময় হালকা গরম পানি পান করা ও গার্গল করা উপকারী হয়। পাশাপাশি সুষম খাবার গ্রহণ ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া উচিত। ঠান্ডা পরিবেশ থেকে সতর্ক থাকাও জরুরি।