বাজারে এখন দেশি ফলের সমাহার। হরেক রকম দেশি ফলের ঘ্রাণে সুরভিত আশপাশ। আর এসময়েই আসে লিচু। গ্রীষ্মকালীন এ রসালো ফল খুব কম সময়ের জন্য আসে। পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি ফল লিচু। প্রতি ১০০ গ্রাম লিচুতে আছে জলীয় অংশ ৮৪ দশমিক ১, খাদ্যশক্তি ৬১ কিলো ক্যালোরি, শর্করা ১৩.৬ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১০ গ্রাম ও ভিটামিন সি ৩১ মিলিগ্রাম। তবে উপকারী বলেই একসঙ্গে অনেক লিচু খাওয়া চলবে না। বরং খেতে হবে পরিমিত। তাই লিচু খাওয়ার আগে এর উপকারিতার পাশাপাশি জেনে রাখুন বেশি খাওয়ার অপকারিতাও।
উপকারিতা
- লিচুর ৮৪ শতাংশের বেশি পানি। তাই লিচু খেলে তা গরমের সময়ে সৃষ্ট শরীরে পানিশূন্যতা দূর করতে দারুণ কাজ করে।
- শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় লিচু।
- লিচুতে থাকে অলিগোনাল নামক বিশেষ উপাদান যা নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করে। যে কারণে লিচু খেলে তা আমাদের শরীরে রক্তের সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। এতে ফ্ল্যাভোনয়েড রয়েছে যা ভাসকুলার ফাংশন উন্নত করে এবং হৃদরোগ প্রতিরোধ করে।
- লিচুতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ম্যাংগানিজ এবং কপার। এসব উপাদান হাড়ের ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে। ফলে নিয়মিত লিচু খেলে হাড়ের ভঙ্গুরতা কমে এবং অস্টিওপোরোসিস ও ফ্র্যাকচারের সম্ভাবনা হ্রাস পায়।
- ফ্ল্যাভানয়েডস নামের একটি উপাদান থাকে লিচুতে, যা স্তন ক্যানসার প্রতিরোধ করে।
- পাকা লিচু ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে। কারণ, এতে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট।
- লিচুতে থাকা পটাসিয়াম আমাদের রক্ত ও নালির চাপ কমিয়ে রক্তের স্বাভাবিক গতি বাড়ায়। ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
বেশি খেলে যা হয়
- মাত্রাতিরিক্ত লিচু খেলে রক্তচাপ অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে।
- লিচুতে হাইপোগ্লাইসিন নামের একধরনের রাসায়নিক পদার্থ থাকে, যা শরীরে শর্করা তৈরি হতে বাধা দেয়। ফলে যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা মাত্রাতিরিক্ত লিচু খেয়ে ফেললে তাদের শরীরে শর্করা (গ্লুকোজ) কমে গিয়ে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
- শিশুরা যদি খালি পেটে বেশি লিচু খায় তবে শরীরের শর্করা কমে গিয়ে বমি ও খিঁচুনি হয়।
- লিচু একটি গরম ফল হওয়াতে অতিরিক্ত লিচু খেলে শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা নষ্ট হয়।