অনেকেই ঝাল খেতে পছন্দ করেন। বাড়ির খাবারে বেশি ঝাল খান। আবার কোনো রেস্তোরাঁয় কোন খাবারটি বেশি ঝাল তা খেতে ছুটে যান। এমন ঝালপ্রিয় মানুষরা স্বাদের বৈচিত্র্যও পছন্দ করে। কিন্তু স্বাদের বৈচিত্র্য আনতে গিয়ে যদি পেটের বারোটা বেজে যায়! তবে উপায় কী? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ঝাল খাবার খেলে আলসারের সমস্যা দেখা দেয়। প্রতিদিন ঝাল, মশলাদার খাবার খেলেই স্টমাক আলসার হয়।
বিশেষজ্ঞরা জানান, পাকস্থলী বা ডিওডিনামের ভেতরের লাইনিং অনেক সময় ক্ষয়ে যায়। সেই অংশে ঘা তৈরি হয়। যা থেকে স্টমাক আলসার হয়। আলসার হলে খাওয়ার পরপরই পেটে জ্বালা বা ব্যথা শুরু হবে। অনেকক্ষণ পেট ভার হয়ে থাকবে। খাওয়ার রুচি চলে যাবে। এমন লক্ষণে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
যারা অত্যধিক ঝাল, মশলাদার খাবার খায় তাদেরই স্টমাক আলসার হয়। ঝাল খাবার পাকস্থলীতে অ্যাসিডের ক্ষরণ বাড়ায়। দীর্ঘদিন পাকস্থলীতে অত্যধিক অ্যাসিড তৈরি হয় বলে তা ছোট ছোট ক্ষত তৈরি করে। যা থেকে আলসার হতে পারে। ঝাল খাবারের সঙ্গে সঙ্গে মশলাদার খাবারও বিপদজ্জনক। যারা মশলা বেশি দিয়ে খাবার খেতে পছন্দ করে তাদেরও আলসার হতে পারে। তবে হ্যালিকোব্যাকটর পাইলোরি নামক একটি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকেও আলসার হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, আলসার রোগীর লক্ষণ দেখেই প্রাথমিক ধারণা করা যায়। আপার জিআই এন্ডোস্কোপি টেস্ট এবং বায়োপসি করে আরও নিশ্চিত হওয়া যায়। আলসারের পেছনে এইচ.পাইলোরি ব্যাকটেরিয়া রয়েছে কিনা, সেটাও জানা যায় এই পরীক্ষায়। আসল কারণ নিশ্চিত করে সেই অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করা হয়।
অ্যাসিডজনিত কারণে আলসার হলে অ্যান্টাসিডজাতীয় ওষুধ দেওয়া হতে পারে। পাশাপাশি রোগীকে হালকা খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। যদি ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া যায়, সেক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, আলসার থেকে বাঁচতে কিংবা আলসার যেন না হয় সে কারণে কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন। ঝাল, মশলাদার খাবার খাওয়া যাবে না, বাইরের খাবার খাওয়া যাবে না, ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করতে হবে, হালকা খাবার খেতে হবে এবং শাক, সবজি ও ফল নিয়মিত খেতে হবে। তবেই আলসার থেকে নিরাপদ থাকা যাবে।