শহরের অধিকাংশ বাবা মা তাদের শিশুর জন্য় ডায়াপার ব্যবহার করেন। শিশু ভূমিষ্ট হওয়ার পর থেকেই ডায়াপার পরানো শুরু হয়। বয়স ৩ হলেও সেই ডায়াপারই সঙ্গী থাকে শিশুদের। ডায়াপার ব্যবহারে ক্ষতি হয় বলে ধারণা রয়েছে অনেকের। তবুও জীবনযাত্রাকে সহজ করতে কিংবা শিশুর ঠান্ডাজনিত রোগ থেকে বাঁচার উসিলায় হলেও ডায়াপার ব্যবহার বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, ডায়াপার ব্যবহার শিশুর ক্ষতির কারণ হয় তখন, যখন তা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত পরিয়ে রাখা হয়। শিশুর জন্য় ডায়াপার ব্যবহারের আগে সময়সীমা জানতে হবে। আর সঠিক নিয়ম ও পদ্ধতি জানলে শিশুর ক্ষতি হবে না। শিশুর ত্বকে র্যাশ, চুলকানির মতো চর্মরোগ দেখা দেবে না।
শিশুদের ত্বক এমনিতেই সংবেদনশীল, স্পর্শকাতর হয়। নরম তুলতুলে ত্বকে ফুসকুড়ির জ্বালাভাব থেকে রেহাই পেতে শিশু বিশেষজ্ঞরা ডায়াপার পরানোর কিছু নিয়মের কথা উল্লেখ করেছেন। যেমন_
· সারাদিনের নির্দিষ্ট সময়েই ডায়াপার ব্যবহার করতে হবে। শিশুকে সব সময় ডায়াপার পরিয়ে রাখা যাবে না। দিনের বা রাতের নির্দিষ্ট সময় ডায়াপার ব্যবহার করতে হবে।
· বাইরে বের হলে শিশুকে ডায়াপার পরানো হয়। সেক্ষেত্রে কাছাকাছি কোথাও গেলে ডায়াপার পরানো দরকার নেই। ডায়াপার ছাড়াই যদি শিশু টয়লেটের অভ্যাস থাকে তবে ধীরে ধীরে তা ছাড়িয়ে নিন।
· শিশুর জন্য়ে ভালো মানের ডায়াপার হওয়া জরুরি। নরম সুতির কাপড়ের ডায়াপার কিনবেন। অন্য ডায়াপার কিনবেন না। অন্য ধরনের কাপড়ে ঘষা লেগেই শিশুর ত্বক লালচে হয়ে যেতে পারে। প্রয়োজনে শিশু চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
· ডায়াপারে ভিজে গেলে তা বোঝার জন্য় বাইরে ইনডিকেটর দেওয়া থাকে। যেমন ডায়াপারের বাইরে হলুদ রঙের লম্বা দাগ থাকে। তা শিশুর প্রস্রাবে ভিজে গেলে নীল বর্ণের হয়ে যায়। এমন ডায়াপারই কিনুন। যখনই ইনডিকেটরে নীল বর্ণ হবে সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে দিন। এতে শিশুর অস্বস্তি কমবে।
· সারারাত শিশুকে ডায়াপার পরিয়ে রাখবেন না। প্রয়োজনে ডায়াপার ছাড়াই ঘুমাতে দিন শিশুকে।
· ডায়াপার দীর্ঘ সময় পরানো হলেই শিশুর ত্বকে র্যাশ হয়। অ্যালার্জি হয়। ত্বক লালচে হয়ে ফুলে যায়। জ্বালাভাব হয়। তাই কখনোই দীর্ঘ সময় ডায়াপার পরিয়ে রাখবেন না। ডায়াপার যদি নাও ভিজে তবুও বদলে নিন। অন্তত ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা পরপরই শিশুর ডায়াপার বদলে দেবেন।
· শিশু মলমূত্র ত্যাগ করলে সঙ্গে সঙ্গেই বদলে দিন। সেই অবস্থায় ডায়াপার পরিয়ে রাখবেন না। এতে শিশুর ত্বকে সংক্রমণ হয়।
· শিশুকে সকালে গোসলের আগে অলিভ অয়েল বা নারকেল তেল দিয়ে মালিশ করুন। এতে র্যাশ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
· জন্মের পর থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যেই শিশুর র্যাশের সমস্যা বেশি হয়। তাই এই সময় শিশুকে কী ধরনের ডায়াপার পরাবেন এবং কত সময় পরাবেন তা নিয়ে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলাপ করে নিন।