যুগ যুগ ধরে মধুর ঔষধি গুণকে কাজে লাগিয়ে আসছে মানুষ। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও মধুর উপকারিতার কথা বিশেষভাবে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কথা হলো ডায়াবেটিস রোগীদের যেহেতু মিষ্টিজাতীয় খাবারে বিধিনিষেধ রয়েছে তাই প্রশ্ন আসাটা স্বাভাবিক যে, ডায়াবেটিস হলে মধু খাওয়া যাবে কিনা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, মধুতে ২৫-৩৭ শতাংশ গ্লুকোজ, ৩৪-৪৩ শতাংশ ফ্রুকটোজ, ০.৫-৩ শতাংশ সুক্রোজ ও ৫-১২ ম্যালটোজ থাকে। গ্লুকোজ তো আছেই, বাকি শর্করাটুকুও রেচন প্রক্রিয়ায় শেষ পর্যন্ত গ্লুকোজে রূপান্তরিত হয়। অর্থাৎ গৃহীত মধুর প্রায় ৭৫ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ গ্লুকোজে পরিণত হচ্ছে।
প্রতি গ্রাম মধু থেকে ১.৮৮ কিলোক্যালোরি শক্তি পাওয়া যায়। এতে সামান্য পরিমাণে প্রোটিনও পাওয়া যায়। মধু একটি ঘন শর্করা জাতীয় খাদ্য। তাই মধু মিষ্টি জাতীয় খাদ্য হলেও ডায়াবেটিস রোগীরা মধু খেতে পারেন। তবে সেটি খেতে হবে পরিমিতভাবে। যেমন, যতটুকু মধু খাবেন, তার সমপরিমাণ শর্করা জাতীয় খাদ্য ওই বেলা কম খেতে হবে।
আর একসঙ্গে বেশি পরিমাণ মধু কোনোভাবেই খাওয়া উচিত হবে না। এক চামচ মধু খাওয়ার জন্য প্রায় দেড় কাপ ভাত, ছোট একটি রুটি খাওয়া বাদ দিতে হবে। কেউ যদি এই হিসাব মেনে নিয়ে মধু খেতে পারেন তবে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। তবে এটি করা বেশির ভাগ ডায়াবেটিস রোগীর পক্ষেই কঠিন হয়ে যায়। বিশ্বে টাইপ-২ ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি।
এসব রোগীদের অধিকাংশ সময়ই মিষ্টি জাতীয় খাবার না খাওয়ার নির্দেশনা দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। অনেকে বিকল্প হিসেবে মধু খাওয়ার কথা বলেন। যদি রোগী ইনসুলিন গ্রহণ করেন তাহলে তাকে প্রতিদিনের কার্বোহাইড্রেট সংখ্যার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের কার্বোহাইড্রেট এবং ফাইবারের উপাদানের প্রতিও বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।
তা না হলে রক্তে চিনির মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডায়াবেটিস রোগীদের সীমিত পরিমাণে মধু খাওয়া যেতে পারে। তবে মধু খেতে চাইলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে খাওয়া উচিত। তাই মধু খাওয়ার ব্যাপারে সচেতন থাকলে শরীর সুস্থ থাকবে।