বর্ষার এসময় স্বাভাবিক কারণেই প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। নদ-নদী, খাল-বিল পানিতে পরিপূর্ণ। এমনকি শহরে কোথাও কোথাও জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। ফলে এসময় বেড়ে যায় পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব। বিশেষ করে পানি বাহিত রোগ ডায়রিয়ার প্রকুপ বাড়ে। তাই সাবধান থাকা প্রয়োজন। চলুন জেনে নেই ডায়েরিয়া থেকে সুস্থ থাকতে আমাদের করণীয়-
- ডায়রিয়া থেকে বাচতে বিশুদ্ধ পানি পান করুন। এক্ষেত্রে পানি ফুটিয়ে ঠান্ডা করে একটি পরিষ্কার পাত্রে সংরক্ষণ করে পান করা। এ ছাড়া ফিটকিরি ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ব্যবহার করা যেতে পারে। ভালো মানের মিনারেল ওয়াটার পান বিকল্প হতে পারে।
- অনেক সময়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনের নোংরা, ঘোলাটে পানিতেই গৃহস্থালির কাজ সারছেন। বাসন ধুচ্ছেন। জামা-কাপড় কাচছেন। এই দৃশ্য অধিকাংশ গ্রামাঞ্চলের। শহরাঞ্চলেও কোথাও কোথাও এরকম চিত্র দেখা যায়। এসব নোংরা পানি থেকেও রোগ ছড়াচ্ছে। তাই রান্না বা অন্যান্য গৃহস্থালি কাজে পরিষ্কার পানি ব্যবহার করুন।
- ঘন ঘন হাত ধোয়া। হাতের নখ কেটে সব সময় ছোট রাখার চেষ্টা করা। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে তারা যেহেতু বাইরে খেলাধুলা করে, ঘরের ছোট ছোট জিনিস হাতে নিয়ে মুখে দেয়।
- কাঁচা শাকসবজি ও ফলমূল কখনোই না ধুয়ে খাবেন না। কোনোভাবেই বাসি খাবার খাওয়া যাবে না। খাবার ভালোভাবে গরম করে খেতে হবে।
- পেটের রোগ এই সময়ের সবচেয়ে বড় সমস্যা। এর কারণ হল ব্যাক্টেরিয়ার প্রকোপ। ই-কোলাই ব্যাক্টেরিয়া মলের মধ্যে থাকে। কোনও কারণে মল পানির সঙ্গে মিশে গেলে সংক্রমণ হয়। সেই দূষিত পানি যদি কোন ভাবে পেটে গেলে তখন গেলে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। তাই সাবধানে থাকতে হবে।
- বাইরের বিশেষ করে খোলা খাবার কোনোভাবেই খাওয়া যাবে না। গরমে বাইরে বিক্রি হওয়া পানি, শরবত, জুস প্রভৃতি পান করবেন না।
- খাওয়াদাওয়ায় বেশি নজর দিতে হবে এই সময়ে। বেশি করে পানি খেতে হবে এবং ভাজাভুজি, তেল মশলাদার খাবার খাওয়া একেবারেই চলবে না। বাইরে থেকে ফল কিনে এনে খেলে, তা ভাল করে ধুয়ে নিন। শাকসব্জি ভাল করে সিদ্ধ করে রান্না করুন। সহজে হজম হয় এমন খাবার খেতে হবে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতে হবে। এতে শরীরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ঢুকবে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। লেবু জাতীয় ফল, পেয়ারা বেশি করে খান। খাবারে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকলে ভাল। রেড মিটের বদলে মাছ, ডিম, মুরগির মাংস খেতে পারেন।