• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারি, ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩০, ৯ রজব ১৪৪৬

শৈত্যপ্রবাহের সময় কীভাবে সুস্থ থাকবেন


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২৫, ১২:২৪ পিএম
শৈত্যপ্রবাহের সময় কীভাবে সুস্থ থাকবেন
ছবি: সংগৃহীত

শৈত্যপ্রবাহ বা শীতকালীন তীব্র ঠান্ডায় শারীরিক অসুস্থতা বেড়ে যায়। এই সময় সুস্থ থাকা রীতিমতো চ্যালেঞ্জ। তীব্র ঠান্ডার প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে এবং সুস্থ থাকার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী।

গরম পোশাক পরিধান করুন
শৈত্যপ্রবাহের শুরুতেই গরম পোশাক পরিধান করা উচিত। ঠান্ডা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আপনি উলের সোয়েটার, স্কার্ফ, গ্লাভস, মোজা এবং হ্যাট পরতে পারেন। বিশেষভাবে যেসব অংশ ঠান্ডায় বেশি আক্রান্ত হয়, যেমন হাত, পা, কান এবং নাক, সেগুলোর যথাযথ সুরক্ষা নিশ্চিত করুন। গরম পোশাকের মাধ্যমে শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখা সম্ভব হয় এবং ঠান্ডাজনিত রোগের ঝুঁকি কমে।

স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখুন
শীতকালে ঘরে তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারণে বেশিরভাগ মানুষ অসুস্থ বোধ করেন। এসময় ঘরে স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখা জরুরি। ঘরের দরজা এবং জানালা বন্ধ রাখুন যাতে বাইরে থেকে ঠান্ডা বাতাস প্রবাহিত না হয়। কম্বল বা উষ্ণ বালিশ ব্যবহার করে ঘরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করুন। তাছাড়া, অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে কনজেশন বা শ্বাসকষ্টের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে, তাই ঘরের আর্দ্রতা ঠিক রাখতে সঠিক হিটার ব্যবহার করুন।

সুষম খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন
শীতকালীন খাদ্যাভ্যাসের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। সুষম খাদ্য শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সহায়ক। শীতকালে প্রচুর শাক-সবজি, ফলমূল, এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে চেষ্টা করুন। গরম খাবার ও পানীয় যেমন স্যুপ, চা, গরম দুধ ইত্যাদি শীতকালে শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে ভিটামিন ডি, সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবারও খেতে হবে।

প্রচুর পানি পান করুন
শীতকালীন ঠান্ডা আবহাওয়ায় অনেকেই পানি কম পান করেন, তবে এই সময়েও সঠিক পরিমাণ পানি পান করা জরুরি। পানি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ত্বককে আর্দ্র রাখে। শরীরে পানির অভাব হলে হাইড্রেশন সমস্যা হতে পারে, যা শারীরিক দুর্বলতা সৃষ্টি করতে পারে।

শ্বাসকষ্ট ও সংক্রমণ থেকে বাঁচুন
শীতকালে ঠান্ডার কারণে শ্বাসকষ্ট, কাশি, সর্দি, ফ্লু ইত্যাদি হতে পারে। এসব থেকে বাঁচতে চেষ্টা করুন ঠান্ডা পরিবেশে দীর্ঘ সময় না থাকার। ঘরের মধ্যে যথাযথ তাপমাত্রা বজায় রেখে, বাতাস পরিষ্কার রাখতে নিয়মিত বাতানলীকরণ করুন। গরম পানির বাষ্পও শ্বাসকষ্টের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। যদি শ্বাসকষ্ট বা ফ্লু আক্রান্ত হন, চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং রোগটি দ্রুত সারাতে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করুন।

শারীরিক সক্রিয়তা
শীতকালীন আবহাওয়ার মধ্যে শরীরকে শিথিল হয়ে যেতে দেওয়া উচিৎ নয়। যতটা সম্ভব শারীরিক সক্রিয়তা বজায় রাখুন। হাঁটাচলা, হালকা ব্যায়াম বা যেকোনো শারীরিক কার্যকলাপ, যেমন যোগব্যায়াম বা সাঁতার কাটা, শরীরকে উষ্ণ রাখতে এবং সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ব্যায়াম শরীরে রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম নিন
শীতে শরীর দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়ে, তাই পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম খুবই জরুরি। সঠিক বিশ্রামের মাধ্যমে শরীর পুনরায় শক্তি সঞ্চয় করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। রাতে অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন এবং দুপুরে যদি প্রয়োজন হয় বিশ্রাম নিতে পারেন।

ত্বক ও চুলের যত্ন
শীতে শুষ্ক ত্বক এবং চুলের সমস্যা বাড়তে পারে। তাই ত্বককে আদ্র রাখতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। ঠান্ডার কারণে ত্বক ফেটে যেতে পারে, বিশেষত হাত, পা এবং ঠোঁটের উপর বিশেষ যত্ন নেওয়া দরকার। শীতকালে মাথার ত্বকও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাই নিয়মিত তেল বা হালকা শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।

ভিটামিন ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস নিন
শীতকালে শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ এবং মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টসের অভাব ঘটতে পারে। বিশেষ করে ভিটামিন ডি, সি, আয়রন এবং জিঙ্ক শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাই এই উপাদানসমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে শীতকালে সুস্থ থাকা সম্ভব।

Link copied!