মানব শরীরের সবচেয়ে বড় অঙ্গটি হলো তার ত্বক। ত্বকে নানা ধরণের রোগ হয়। তার মধ্যে স্ক্যাবিস একটি। স্ক্যাবিস একটি বিরক্তিকর ও বিব্রতকর এবং খুবই পরিচিত সমস্যা। বাংলায় একে বলা হয় খুজলি বা খোসপাঁচড়া। ফিমেল সার্কোপটিস স্ক্যাবি হোমিনিস নামের একটি প্যারাসাইট দ্বারা স্কাবিস রোগটি হয়। এই রোগে বাংলাদেশের অনেকে আক্রান্ত।
এই রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত পরামর্শ দিয়েছেন, ময়নামতি মেডিকেল কলেজের চর্ম ও যৌন রোগ চিকিৎসক ডা: আসিফ মোজতাবা সরকার।
লক্ষণ
- রোগীর হাতের আঙ্গুলের চিপা, কবজী, বগলের নীচে, নাভীর আশেপাশে, নিতম্বে বা গোপনাঙ্গের আশেপাশে ছোট ছোট গোটার মতো হবে এবং গোটার গুলোর মুখে পানি থাকবে।
- তীব্র চুলকানি হয়, রাতে চুলকানির তীব্রতা আরও বাড়ে।
- এই রোগটি সাধারণত মাদ্রাসার বোডিং বা হোস্টেল অর্থাৎ যেখানে বেশি মানুষ একসঙ্গে গাদাগাদি করে থাকে সেখানে বেশি হয়ে থাকে।
যেভাবে ছড়ায়
এটি একজন থেকে আরেকজনে সংক্রমিত হয় এবং দ্রুত ছড়ায়। এক বিছানায় একত্রে অনেকেই গাদাগাদি করে ঘুমালে, এক তোয়ালে বা বালিশ–চাদর ব্যবহার করলে একজন থেকে আরেকজনে ছড়ায় এ রোগ। ঘরের কারও একবার হলে বাকিদের মধ্যেও দ্রুত ছড়ায়।
চিকিৎসা
স্ক্যাবিস রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে ডা: আসিফ বলেন রোগটি খুব সাধারণ। কিন্তু সচেতনতার ঘাটতির কারণে চিকিৎসা পেতে দেরি হয়। এ কারণে সেরে উঠতেও সময় লাগে। চিকিৎসা নিয়মতান্ত্রিক ভাবে করতে হবে। যদি নিয়ম অমান্য করা হয় তাহলে এই রোগ সহজে ভালো হয় না। ডাক্তাররা যদি রোগটাকে ডায়াগনোসিস করতে পারে যে, কেউ স্ক্যাবিস রোগে আক্রান্ত তখন তাকে ৫% পারমিথ্রিন ক্রিম ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়। এবং এই ওষুধটা ঘরের সবাইকে ব্যবহার করতে হয়। প্রথমদিন দেওয়া হয় এবং সাত দিন পর দেওয়া হয়। তবে এইটা নির্ভর করে রোগের তীব্রতার উপর। যদি রোগটা ইনফেকশিয়াস হয় তাহলে চিকিৎসকেরা ক্রিমের সঙ্গে এন্টিবায়োটিক খেতে দেয়। এন্টিবায়োটিক খাওয়া শেষ হলে তারপর ক্রিম ব্যবহার করতে বলে। ক্রিম কতদিন ব্যবহার করবে তা নির্ভর করে রোগের তীব্রতার ওপর।
স্ক্যাবিস রোগটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে বা এর থেকে বাঁচতে হলে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিতে হবে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে এই রোগ সহজেই সেরে উঠা যায়।