রমজান মাসে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকা হয়। শেষ রাতে সাহরি খেয়ে প্রায় ১৪ ঘণ্টা রোজা রেখে এরপর ইফতার করা হয়। এই সময় শরীরে শক্তি ধরে রাখা এবং শরীরে সতেজতা বজায় রাখা চ্যালেঞ্জিং হয়ে যায়। রোগীদের জন্য় রোজা রাখা আরও বেশি চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে ডায়াবেটিসের রোগীদের রোজার সময় আরও সতর্ক হতে হয়। তবে সবকিছু স্বাভাবিক রাখার পূর্বশর্ত হচ্ছে স্বাস্থ্যকর সাহরি ও ইফতার। খাওয়া দাওয়া স্বাস্থ্যকর হলে এবং নিয়ম মেনে চললে শরীরকে সুস্থ রাখা খুব বেশি কষ্টকর নয়। তাই স্বাস্থ্যকর সাহরি নিশ্চিত করতে কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
পরিমিত খাবার
সাহরি খেয়ে রোজা রাখছেন। কিন্তু সাহরিতে কোনোভাবেই বেশি পরিমাণে খাওয়া যাবে না। অনেকের ধারণা সাহ্রিতে পেট ভরে খেলে সারাদিন ক্ষুধা লাগবে না। তাই এই সময় অনেকেই প্রচুর পরিমাণে খেয়ে নেন। সাহরির সময় শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু না কিছু খেতেই থাকেন। এটা ঠিক নয়। বেশি পরিমানে খেলে অস্বস্তি বাড়বে এবং রোজা রাখতে কষ্ট হবে।
ভারি খাবার
সাহরিতে ভারি খাবার না খাওয়াই ভালো। স্বাভাবিক খাবারগুলোই খাদ্যতালিকায় রাখুন। সাদা ভাত খাবেন। এরসঙ্গে মাছ, মাংস, সবজি খেতে পারেন।
লাল চালের ভাত
সাহ্রিতে লাল চালের ভাত খাবেন। লাল চাল না পেলে মোটা চালের ভাত খেতে পারেন। তবে আতপ চালের ভাত খাবেন না। সেদ্ধ মোটা চাল এবং লাল চালের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেক কম। যা সারাদিনের খুব ধীরে ধীরে শক্তি সরবরাহ করে। তাই রোজা রেখে কষ্ট হবে না। আতপ চালের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কিছুটা বেশি যা দ্রুত হজম হয়। এতে দ্রুত ক্ষুদা পেয়ে যাবে। , ফলে এটি খুব দ্রুত হজম হয়ে যাবে।
মাছ বেশি খান
সাহ্রিতে অবশ্যই মাছ বেশি খাবেন। এই সময় মাংস কম খাওয়াই ভালো। কারণ মাছে ভালো চর্বি তুলনামূলক বেশি। এছাড়াও মাংস পরিপাকে শরীরে বেশি পানির প্রয়োজন হয়। যা শরীর থেকে পানি টেনে নিবে এবং ঘন ঘন পিপাসা পাবে। রোজা রেখে অস্বস্তি লাগবে।সাহ্রিতে দুধ
প্রতিদিন সাহ্রিতে একগ্লাস দুধ খেতে পারেন। এটি শরীরে শক্তি দিবে। সারা দিন শরীর সতেজ থাকবে। এছাড়াও দুধের তৈরি খাবারও খেতে পারেন। সারাদিন শক্তি পাবেন। এককাপ দইও খেতে পারেন।
শাকসবজি
সাহ্রিতে শাকসবজি বেশি খাবেন। শাকের সেলুলোজ থাকে। যা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করবে। এছাড়াও শাকসবজির আঁশে শরীরে পানি ধরে রাখে। পরিমিত পরিমাণে শাক-সবজি খেলে সারা দিন পানিশূন্যতা হবে না। পুঁইশাক, লালশাক, লাউশাক, পালংশাক খেতে পারেন। সবজির মধ্যে ঢ্যাঁড়স, পেঁপে, বাঁধাকপি, বিটরুট, লাউ, টমেটো, ফুলকপি রাখুন খাদ্যতালিকায়।
বেশি পানি পান করবেন না
সাহরিতে বেশি খেলে যেমন সমস্যা হয়, তেমনি বেশি পানি পান করাও ঠিক নয়। গলা শুকিয়ে যাবে ভেবে আপনি হয়তো বেশি পানি পান করছেন। কিন্তু পানি বেশি পান করলে প্রস্রাবও বেশি হয়। এতে আপনার অতিরিক্ত খাওয়া খাবারগুলো পরিপাকের জন্য শরীরকোষের ভেতরে পানির ঘাটতি হবে। ফলে ঘন ঘন পানি পিপাসা পাবে। রোজা রাখা কষ্ট হয়ে যাবে।
ফলমূল
সাহ্রিতে একটা খোসাসহ ফল খেতে পারেন। যেমন—আপেল, নাসপাতি, পেয়ারা, খেজুর, আঙুর ইত্যাদি। এগুলো আঁশসমৃদ্ধ হওয়ায় ক্ষুধা প্রতিরোধে সহায়তা করে।
রান্নায় মসলা
সাহরির জন্য যে খাবার রান্না করবেন তাতে তেল ও মসলা কম দিন। তেল-মসলাসমৃদ্ধ খাবারে অ্যাসিডিটির সমস্যা বাড়বে। পেটে ব্যথা হবে এবং বুক জ্বালাপোড়া করে। শরীরে পানির ঘাটতি হয়। যার ফলে এই সময় কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।