• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫, ১১ চৈত্র ১৪৩০, ২৪ রমজান ১৪৪৬

গর্ভবতী নারীর শরীরচর্চা কতটা জরুরি


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ২০, ২০২৫, ১০:১৩ পিএম
গর্ভবতী নারীর শরীরচর্চা কতটা জরুরি
ছবি: সংগৃহীত

গর্ভাবস্থা নারীর জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই সময় শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। শরীরচর্চা বা ব্যায়াম গর্ভবতী নারীর জন্য শুধু উপকারীই নয়, বরং এটি সুস্থ ও স্বাভাবিক গর্ভধারণের পূর্বশর্ত। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ও সঠিক ব্যায়াম গর্ভবতী নারীদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করে। এই অভ্যাস প্রসবকালীন জটিলতা কমায় এবং শিশুর সুস্থ বিকাশে সাহায্য করে।

গর্ভবতী নারীর জন্য শরীরচর্চা কেন প্রয়োজন

গর্ভাবস্থায় নারীদের শরীরে নানা ধরনের পরিবর্তন ঘটে। যেমন ওজন বৃদ্ধি, হরমোনের পরিবর্তন, শারীরিক ব্যথা ও ক্লান্তি। নিয়মিত ব্যায়াম এসব সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং সুস্থ গর্ভাবস্থায় সহায়তা করে। 

গর্ভকালীন শারীরিক পরিবর্তন সামলাতে সাহায্য করে

গর্ভকালীন সময়ে নারীদের পিঠব্যথা, কোমর ব্যথা ও জয়েন্ট ব্যথা সাধারণ সমস্যা। ব্যায়াম এই ব্যথাগুলো কমিয়ে দেয়। পেশির শক্তি ও সহনশীলতা বাড়ায়, যা প্রসবের সময় কাজে আসে। অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি কমায় এবং স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করে।

স্বাভাবিক প্রসবের সম্ভাবনা বাড়ায়

যেসব গর্ভবতী নারী নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করেন, তাদের নরমাল ডেলিভারির সম্ভাবনা বেশি। ব্যায়াম শরীরকে প্রসবের জন্য প্রস্তুত করে এবং প্রসবকালীন ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা বাড়ায়।

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করে

গর্ভাবস্থায় অনেক নারী গর্ভকালীন ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন। নিয়মিত ব্যায়াম রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে, ফলে এই রোগগুলোর ঝুঁকি কমে।

মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে

গর্ভাবস্থায় অনেক নারী ডিপ্রেশন, স্ট্রেস ও উদ্বেগে ভোগেন। ব্যায়াম এন্ডরফিন (সুখের হরমোন) বৃদ্ধির মাধ্যমে মানসিক চাপ কমায়। ঘুমের সমস্যা কমায় এবং মন ভালো রাখে।

গর্ভবতী নারীর জন্য উপযোগী ব্যায়াম

গর্ভাবস্থায় সব ধরনের ব্যায়াম করা ঠিক নয়। হালকা ও মাঝারি মাত্রার ব্যায়াম উপকারী। তবে উচ্চ মাত্রার বা ভারী ব্যায়াম ক্ষতিকর হতে পারে।

·       গর্ভাবস্থায় সবচেয়ে নিরাপদ ও কার্যকর ব্যায়াম হলো নিয়মিত হাঁটা। এতে ওজন নিয়ন্ত্রণ, রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি, পা ফুলে যাওয়া প্রতিরোধ, হার্ট ও ফুসফুসের কার্যকারিতা উন্নত করে। প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট ধীরগতিতে হাঁটা ভালো।

·       গর্ভকালীন ব্যথা কমাতে এবং পেশি নমনীয় রাখতে হালকা স্ট্রেচিং উপকারী। এটি  পিঠ ও কোমরের ব্যথা কমায়, প্রসবের সময় পেশিকে নমনীয় রাখে।

·       গর্ভবতী নারীদের জন্য বিশেষ প্রেনাটাল ইয়োগা অত্যন্ত উপকারী। এটি মানসিক চাপ কমায়। শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণে রাখে। বাটারফ্লাই পোজ, ক্যাট-কাউ পোজ এই সময় বেশি উপকারী।

·       প্রসবের সময় সঠিক শ্বাসপ্রশ্বাস ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা বাড়ায়। ধীরে ধীরে গভীর শ্বাস নেওয়া এবং ছাড়ার অভ্যাস করা উচিত।

গর্ভাবস্থায় ব্যায়ামের সতর্কতা

গর্ভবতী নারীদের ব্যায়াম করার সময় কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ব্যায়াম করা উচিত। হালকা ও মাঝারি ব্যায়াম করা ভালো, অতিরিক্ত চাপ দেওয়া উচিত নয়। শরীরে অস্বস্তি বা ব্যথা হলে ব্যায়াম বন্ধ করতে হবে। পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত, যেন শরীর পানিশূন্য না হয়। অতিরিক্ত গরম আবহাওয়ায় ব্যায়াম না করাই ভালো। ভারী ওজন তোলা যাবে না। অতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ বা ভারী ব্যায়াম করা যাবে না। বেশি ঝাঁকুনি বা লাফ দেওয়ার ব্যায়াম করা যাবে না। দীর্ঘ সময় পেটে চাপ পড়ে এমন ব্যায়াম করা যাবে না।

Link copied!