ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসার সময় সবচেয়ে কঠিন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার নাম চুল পড়ে যাওয়া। কেমোথেরাপি নেওয়ার পরই শুরু হয় চুল পড়া। যদিও চিকিৎসা শেষ হবার কিছুদিন পর থেকে আবার চুল গজাতে শুরু করে। গবেষণা বলছে, কেমোথেরাপি নিচ্ছেন এমন ৬৫ শতাংশ রোগীই থেরাপি নেওয়ার সময় চুল পড়ার সম্মুখীন হন। বিশেষ করে যারা স্তন ক্যান্সারে ভুগছেন তাদের চুল পড়ার সমস্যাটা আরও বেশি, প্রায় ৯৯ দশমিক ৯ শতাংশ।
যে পরিমাণই চুল পড়ুক না কেন একজন ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর জন্য এইটা বড় একটা সমস্যা। কারণ রোগের কারণেই তারা এমনেতেই মানসিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে, চুল পড়া সেই দুর্বলতাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। সেজন্য ক্যানসারের চিকিৎসা হিসেবে ক্যামোথেরাপির চিকিৎসা নিতে অনেকেই রাজি হোন না, বিকল্প খোঁজেন।
এই সমস্যার সমাধানেই কাজ করছে `লুমিনেট` নামের একটি প্রতিষ্টান। এই প্রতিষ্টানটি সম্প্রতি কেমো-র চিকিৎসা নেয়া রোগীদের জন্য `লিলি` নামে সম্পূর্ণ একটি পোর্টেবল হেলমেট বা হেডগিয়ার তৈরি করেছে। যেটি চিকিৎসার পর ৯০ মিনিট মাথায় পড়ে থাকতে হয়। এই হেলমেটটি পোর্টেবল যার কারণে এটি বাসায় বহন করে নিয়ে যাওয়া যায়।
লুমিনেট বর্তমানে ইউরোপে এই হেলমেটটির পরীক্ষামূলক কাজ চালাচ্ছে। পরীক্ষা চলাকালীন কোম্পানির মতে, এটি ব্যবহার করছে এমন প্রায় ৭৫ শতাংশ রোগী চুল পড়ার সম্মুখীন হননি। লুমিনেটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যারন হ্যানন বলেন, এই যন্ত্রটি ব্যবহার করেছেন এমন স্তন ক্যান্সারের রোগীদের ১২টি সেশন শেষ করেও তাদের প্রায় সব চুল রয়েছে । তিনি আরও বলেন, "যন্ত্রটি ব্যবহারকারীদের এটি ব্যবহারে কোনও গুরুতর সমস্যা হয়নি, তাই এটি নিরাপদ বলেই মনে হচ্ছে"।
হেলমেট লিলি উৎপাদনকারী প্রতিষ্টান লুমিনেট আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করার পরিকল্পনা করছে। মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) অনুমোদন পেলে তারা প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্যিকভাবে এই প্রযুক্তি চালু করবে। সেক্ষেত্রে বাণিজ্যিকভাবে চালু হলে এই যন্ত্রটি স্বাস্থ্য বীমা কোম্পানির মাধ্যমে রোগীদের জন্য পাওয়া যাবে। তাতে প্রতিটি হেলমেটের জন্য বীমা কোম্পানির খরচ হবে প্রায় ১,৭০০ ডলার।