শরীরের স্বাভাবিক কাজকর্ম ঠিক রাখতে হরমোন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। হরমোনের ভারসাম্যহীনতা থেকে তৈরি হয় শারীরিক ও মানসিক নানা জটিলতা। সমস্যা হয় প্রজননে। ক্লান্তি এসে ভর করে শরীরে। তাই হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখতে সচেতন থাকতে হবে। চলুন জেনে নেই, যেসব অভ্যাসে নষ্ট হয় হরমোনের ভারসাম্য-
- মিষ্টি খেতে অনেকেই পছন্দ করেন। আর সেজন্যেই হয়ত নিয়মিত মিষ্টি জাতীয় খাবার খেয়ে যাচ্ছেন। আপনার এই শর্করা বেশি গ্রহণ করার প্রবণতায় আপনার হসমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে দেবে। আবার খাবারের পরে চিনি বা চিনিযুক্ত খাবার খেলে ইনসুলিন রেজিস্টেন্সের কারণ হতে পারে। ইনসুলিন রক্তে চিনির (গ্লুকোজ) পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
- অনেকেই আছেন সকালে নাশতা খেতে চান না। সকালে নাশতা না করা মারাত্মক ক্ষতিকর। সকালের নাশতাকে ‘ছাঁটাই’ করার কোনো উপায় নেই। এদিকে সকালের নাশতা হতে হবে প্রোটিনসমৃদ্ধ। সকালের নাশতায় অন্তত ২০ গ্রাম প্রোটিন না খাওয়া দরকার।
- অনেকেরই সকালে উঠেই এক কাপ ধোঁয়া ওঠা চা বা কফির সঙ্গে শুরু হয় দিন। এর ফলেও কর্টিসল নিঃসরণের মাত্রা বাড়ে। হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়।
- ঘুমানোর আগে ফোন স্ক্রল করা অনেকের মধ্যেই একটি সাধারণ অভ্যাস। এমনকি আপনি যদি ফোনে ইয়েলো লাইট অপশনটিও চালু করেন তবু এটি আপনার শরীরে মেলাটোনিন উৎপাদনকে ব্যাহত করতে পারে। মেলাটোনিন হলো শরীর দ্বারা উৎপাদিত একটি হরমোন যা রাত ও দিনের চক্র বা ঘুম-জাগরণ চক্র নিয়ন্ত্রণ করে। যখন ঘুমের চক্র ব্যাহত হয়, তখন অসময়ে ঘুম আসে এবং দেরি করে ঘুম ভাঙে।
- জাঙ্ক ফুড, প্রসেসড ফুড খাওয়ার অভ্যাস আমাদের অনেকেরই। এতে প্রচুর পরিমাণে ইনসুলিন উৎপন্ন হয়, যার ফলে চুল পড়া, ত্বক ও ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়!
- সেরোটোনিন একধরনের ‘হ্যাপি হরমোন’। মেজাজ নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও ঘুম, হজমক্ষমতা, শিক্ষা, ক্ষুধা, এমনকি শরীরের মেটাবলিজম সিস্টেম সচল রাখতেও সহায়তা করে সেরোটোনিন। সূর্যের আলো বা রোদে থাকলে, প্রকৃতির সংস্পর্শে থাকলে, যোগব্যায়াম করলে এই হরমোনের নিঃসরণ বৃদ্ধি পায়। তাই প্রকৃতির কাছে না যাওয়া মানে হরমোনের ভারসাম্যহীনতাকে আমন্ত্রণ জানানো!
- অতিরিক্ত মদ্যপান হরমোনের উপর প্রভাব ফেলে। ফলে শরীরে হরমোনের সমতা নষ্ট হতে পারে। কাজেই সীমা রেখে মদ্যপান করুন। বেশি ধূমপানও ঠিক নয়। তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের বেশি ব্যবহার কমাতে হবে।
- অনিয়মিত ঘুম বা কম ঘুম শরীরের হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়।