বাইরে বেরোনোর সময় ডিওডোর্যান্ট মাখছেন। সুগন্ধিও ব্যবহার করছেন। তবু কি গায়ের দুর্গন্ধ যাচ্ছে না? শুধু গরমকাল নয়, বছরভরই কারো কারো এই সমস্যা থাকে। সেই সমস্যার সমাধানে বেছে নিতে পারেন অতি সাধারণ একটি জিনিস, ফিটকিরি। ঘামের থেকে হওয়া বিশ্রী গন্ধ তাড়াতেও এটি কাজে আসতে পারে?
ফিটকিরি কী?
এটি এক ধরনের খনিজ লবণ, যার বিজ্ঞানসম্মত নাম পটাশিয়াম অ্যালাম। আগে যখন ফিল্টার আসেনি, তখন পানি পরিশোধনে ফিটকিরি ব্যবহার করা হতো। এর মধ্যে রয়েছে সংক্রমণ প্রতিরোধকারী উপাদান।
কেন ফিটকির কার্যকর?
ঘাম শরীরের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এতে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়। আবার এই ঘামের ফলেই পরিচ্ছন্নতার অভাবে অনেক সময় নানা রকম ব্যাকটেরিয়া শরীরে বাসা বাঁধে। ঘামের দুর্গন্ধের কারণ হয়ে ওঠে তারাই। অবশ্য শরীরে দুর্গন্ধের আরও অনেক কারণ থাকতে পারে। নানা রকম অসুখ-বিসুখ হলে, ডায়াবেটিক রোগীদেরও অনেক সময় ঘামে দুর্গন্ধ হয়।
তবে ব্যাকটেরিয়ার জন্য হওয়া দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে ফিটকিরিতে থাকা উপাদান। এতে রয়েছে অ্যাস্ট্রিনজেন্ট। যা ত্বকের রন্ধ্রমুখ বন্ধ করে অতিরিক্ত ঘাম হওয়া আটকায়। এতে থাকা অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান ব্যাকটেরিয়া নিয়ন্ত্রণ করে দুর্গন্ধের উৎস বন্ধ করতে সাহায্য করে।
ব্যবহারবিধি
ফিটকিরি সাধারণত ক্রিস্টাল আকারে থাকে। তবে গুঁড়া ও তরল হিসাবেও এখন পাওয়া যায়। দোকান থেকে ফিটকিরি কিনে বাড়িতেও তা গুঁড়িয়ে নিতে পারেন।
১. ফিটকিরির ছোট্ট টুকরো পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। কিছুক্ষণ পরে সেই পানি বাহুমূলে ও শরীরের যে স্থানগুলিতে বেশি ঘাম হয়ে, সেখানে ব্যবহার করুন। পাশাপাশি, ভিজিয়ে রাখা ফিটকিরিটিও গায়ে ঘষে নিতে পারেন। কিছুক্ষণ রাখার পর তা ধুয়ে ফেলতে হবে।
২. দুই টেবিল-চামচ ফিটকিরি গুঁড়ার সঙ্গে কয়েক ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিন। ল্যাভেন্ডার, টি-ট্রি অয়েল—পছন্দের যে কোনো এসেনশিয়াল অয়েল বেছে নিতে পারেন। মিশ্রণটি বাহুমূলে বা শরীরে বেশি ঘাম হয় যেখানে, সেখানে হালকা হাতে ঘষে নিন। এসেনশিয়াল অয়েলের সুগন্ধী শরীরে লেগে থাকবে। গোসলের আগে এটি ব্যবহার করলে, দুর্গন্ধের সমস্যার সমাধান হতে পারে।
৩. গরম পানিতে ফিটকিরির গুঁড়া নিন। তারপর স্প্রে বোতলে ভরে নিন। এভাবে ফিটকিরি সহজেই ব্যবহার করা যাবে। স্নানের পর বা বাইরে বেরোনোর আগে গায়ে বা বাহুমূলে, হাতের তালু ও পায়ের স্প্রে করে নিতে পারেন।
সূত্র : আনন্দবাজার