শিশুদের খাবারের বিষয়ে বেশ সতর্ক থাকতে হয়। শিশুদের জন্য় সুষম ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তবে কিছু খাবারে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে। কিছু শিশুর ফুড অ্যালার্জি বা ফুড ইনটলারেন্স থাকতে পারে। যার কারণে কিছু খাবার তাদের শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটায়।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ফুড অ্যালার্জির কারণে শিশুর কিছু খাবার সহ্য নাও হতে পারে। এটি শরীরের ইমিউন প্রক্রিয়ার অতিসংবেদনশীলতা থেকে হয়। সাধারণত এটি ‘সাইকোলজিক্যাল ফুড ইনটলারেন্স’। নির্দিষ্ট খাবারের প্রতিই শিশুর এমন প্রতিক্রিয়া হয়। যা দেখেই শিশুর মধ্যে বিরক্তি প্রকাশ পায়। আবার এনজাইমের ঘাটতি থেকেও এমনটা হতে পারে। খাবার হজমে নির্দিষ্ট এনজাইম থাকে। নির্দিষ্ট খাদ্য উপাদানের জন্য নির্দিষ্ট বিপাক রস কাজ করে। নির্দিষ্ট খাবার হজমের নির্দিষ্ট জারক রসের অনুপস্থিতি বা স্বল্পতা থাকতে পারে। কিছু শিশুর মধ্যে জন্মগত এনজাইমের ঘাটতিও হতে পারে।
কিছু শিশু দুধ, ডিম, মাংস, মাছ খেতে চায় না। এসব খাবারে তাদের আগ্রহ থাকে না। তারা সাদা ভাত, সুজি কিংবা পায়েস খেতে পছন্দ করে। আবার কিছু খাবার শরীরে প্রবেশ করলে কিছু রাসায়নিক তৈরি করে। হিস্টামিনের কারণে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া হতে পারে। অ্যালার্জিজনিত রোগ জেনেটিক কারণেও হতে পারে। তাই কিছু খাবার শিশুদের সহ্য হয় না।
শিশুর শরীরে খাবার সহ্য হচ্ছে না, তা বোঝায় কিছু উপায় রয়েছে। যেমন, খাবার সহ্য না হলে ত্বকে চাকা দাগ, যেমন আরটিকেরিয়া, একজিমা হতে পারে। শ্বাসতন্ত্রে আক্রমণ, সর্দি, শ্বাসকষ্ট হতে পারে। পেটে ব্যথা বা মোচড় দিতে পারে। শিশুর রক্তস্বল্পতা, মাইগ্রেন বা অদ্ভূত আচরণও করতে পারে।
শিশুর খাবার সহ্য না হলে করণীয় কী হবে, এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা জানান, সবার আগে শিশুর শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হওয়া খাবারগুলো চিহ্নিত করতে হবে। খাদ্যতালিকা থেকে সেই খাবার বাদ দিতে হবে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই শিশুর শরীরের বিরূপ প্রতিক্রিয়াগুলো মিশে যাবে। এছাড়াও অ্যালার্জিজনিত সমস্যা থাকলে শিশুর খাদ্যতালিকা থেকে গরুর দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবার, ছাগদুগ্ধ, সয়া ও সয়াজাত খাবার, গরুর মাংস, ডিম, কিছু মাছ, চকলেট, প্রিজারভেটিভ খাবার বাদ দেওয়া জরুরি। এসব খাবার শিশুর শরীরে দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। তাছাড়া সবজির মধ্যেও নির্দিষ্ট করতে হবে, কোনটি শিশুর হজমে সহজ হচ্ছে আর কোনটিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটছে। তবেই শিশুকে সুস্থ রাখা যাবে।