ইম্প্যায়ারড গ্লুকোজ টলারেন্স (আইজিটি) হলো প্রি-ডায়াবেটিস স্টেজ। একজন রোগী প্রথমে নরমাল স্টেজে থাকেন তারপর তিনি প্রিডায়াবেটিস স্টেজে থাকেন। এরপর তিনি ডায়াবেটিক রোগী হন। অন্যভাবে বলা যায়, প্রি-ডায়াবেটিস হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে কারো রক্তে সুগার স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি, কিন্তু ডায়াবেটিসের মাত্রার চেয়ে কম থাকে। অর্থাৎ প্রি-ডায়াবেটিসে ব্লাড গ্লুকোজ ফাস্টিং অবস্থায় ৬.১ থেকে ৬.৯ mmol/L, খাওয়ার ২ ঘণ্টা পর ৭.৮ থেকে ১১.০ mmol/L থাকে অথবা রক্তের HbA1C মাত্রা ৫.৭% থেকে ৬.৪% এর মধ্যে হয়। এই প্রি-ডায়াবেটিস স্টেজ কয়েক বছর পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হতে পারে। এই স্টেজ থেকে আমরা নরমালে ফিরিয়ে আনতে পারি।
প্রি-ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কাদের বেশি?
ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার একটি বড় লক্ষণ হলো এই প্রি-ডায়াবেটিস অবস্থা। প্রি-ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের পরবর্তী ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে ডায়াবেটিস রোগ হওয়ার আশঙ্কা ৫০ শতাংশ হয়ে থাকে।
- স্থূলত্ব যারা অর্থাৎ যাদের শরীরের ওজন বেশি হয়
- ৪৫ এর বেশি বয়সীদের
- যারা শারীরিক পরিশ্রম কম করেন
- বংশে বিশেষ করে যাদের বাবা-মা, ভাই-বোনদের মধ্যে ডায়াবেটিস থাকলে
- যাদের গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হয়েছিল
- অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন
কী দেখে বুঝবেন আপনি প্রি-ডায়াবেটিসে আক্রান্ত
প্রি-ডায়াবেটিসের এমন কোনো লক্ষণ নেই, যার মাধ্যমে নিশ্চিত করেই আমরা বলতে পারি যে একজন ব্যক্তি এই সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে সাধারণ যেসব লক্ষণ দেখা যায়-
- তৃষ্ণা বেড়ে যাওয়া
- ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
- ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া
- ক্লান্তি
- চোখে ঝাপসা দেখা।
- হাত-পা জ্বালা
- ঘা শুকাতে সময় নেওয়া।
প্রি-ডায়াবেটিস হলে অবশ্যই একজন ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ কিংবা পুষ্টিবিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। তাদের দেওয়া পরামর্শ অনুযায়ী খাবার ও জীবনাচার মেনে চলা উচিত।
করণীয়
আমরা চাইলেই কিছু নিয়ম মেনে চলে এই শারীরিক সমস্যা থেকে বাঁচতে পারি। প্রি-ডায়াবেটিস প্রতিরোধের সবচেয়ে বড় এবং কার্যকরী উপায় হলো ডায়েট ও জীবনযাপন পরিবর্তন করা। যেমন-
- নিয়মিত ব্যায়াম করা।
- ওজন নিয়িন্ত্রণ করা
- ঘন চিনিযুক্ত খাবার যেমন- মিষ্টি চকলেট, কোমল পানীয়, ফাস্টফুড, অ্যালকোহল, ধূমপান বাদ দিতে হবে।
- খাদ্য তালিকায় প্রচুর ফাইবারযুক্ত খাবার রাখা। লো কার্ব ডায়েট মেনে চলা।
- মাঝে মাঝে খালি পেটে ও খাওয়ার ২ ঘণ্টা পরে রক্তে সুগার মাপতে হবে।