শীতে বেশিরভাগ মানুষের শরীরই পানিশূন্য হয়ে ওঠে! এর মূল কারণ হলো পর্যাপ্ত পানি পান না করা। বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক পানির চাহিদা হলো ৩—৪ লিটার। বিভিন্ন কারণে দৈনন্দিন পানির এই চাহিদা হয়তো অনেকেই পূরণ করতে পারেন না। দীর্ঘদিন এমনটি চলতে থাকলে একসময় শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দেয়। অন্যদিকে শরীর থেকে অনেকটা পানি ঘাম ও প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। এ কারণে দিনে পর্যাপ্ত পানি পান না করলে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার সৃষ্টি হয়। এর থেকে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। রাজধানীর বারডেম হাসপাতাল ও ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. এম. দেলোয়ার হোসেন জানাচ্ছেন বিস্তারিত।
যখন পানিশূন্যতা গুরুতর উপসর্গ সৃষ্টি করে তখন হয়তো অনেক দেরি হয়ে যায়। এর কারণে হঠাৎ কিডনি বিকলও হতে পারে। এছাড়া প্রস্রাবে ইনফেকশনের মতো জটিল সমস্যাও দেখা দেয়।
পানিশূন্যতার লক্ষণ কী কী?
- মাথাব্যথা
- কোষ্ঠকাঠিন্য
- দুর্বলতা ও ক্লান্তি
- শুষ্ক ত্বক
- জয়েন্টে ব্যথা
- ওজন বেড়ে যাওয়া
- রক্তচাপ কমে যাওয়া
- প্রস্রাবে সংক্রমণ
- কিডনি বিকল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
বেশিরভাগ মানুষই প্রাথমিক অবস্থায় টের পান না যে, তিনি পানিশূন্যতায় ভুগছেন। তবে চাইলে আপনি ঘরেও পরীক্ষা করতে পারবেন পানিশূন্যতায় ভুগছেন কি না। মাত্র ৩০ সেকেন্ডেই এটি পরীক্ষা করা যায়। স্কিন টার্গর বা ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা পরীক্ষার মাধ্যমে এটি সহজেই জানা যায়। এজন্য হাতের উপরের চামড়ায় দুটি আঙুল দিয়ে চিমটি দিয়ে যতটা সম্ভব চামড়া টেনে ধরুন। কয়েক সেকেন্ডের জন্য চামড়া টেনে ধরে তারপর ছেড়ে দিন। এবার খেয়াল করে দেখুন, ত্বকের রং ফ্যাকাশে দেখাচ্ছে কি না। যদি স্থানটি ফ্যাকাসে হয় আর ত্বকের রং স্বাভাবিক হতে সময় লাগে, তাহলে বুঝবেন আপনি পানিশূন্যতায় ভুগছেন। আর যদি ত্বকের রং দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে যায়, তাহলে বুঝবেন আপনার শরীরে পানির ঘাটতি নেই।
আপনি যদি ডিহাইড্রেশনের বিভিন্ন উপসর্গ, যেমন— শুষ্ক মুখ, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা কিংবা বারবার পানির পিপাসা বোধ করেন তাহলে অল্প অল্প করে বারবার পানি পান করুন। এর পাশাপাশি পর্যাপ্ত তরল পান করুন। যদি বমি, অতিরিক্ত ঘাম বা ডায়রিয়া হয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।