শুধু অবহেলার কারণে হৃদরোগে নারীরা মারা যান বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। ব্রিটিশ কার্ডিওভাসকুলার সোসাইটির সঙ্গে যুক্ত হয়ে ৩৩ জন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এক গবেষণায় এমন বিবৃতি প্রদান করেছেন। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘হার্ট’-এ।
উচ্চ রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল হৃদরোগের ঝুঁকি বহুলাংশে বাড়িয়ে দেয়। অথচ এ দুইটি সমস্যা পুরুষের ক্ষেত্রে যত দ্রুত নির্ণয় করা হয়, নারীদের ক্ষেত্রে তা হয় না। অথচ বেশিরভাগ হৃদরোগই প্রতিরোধযোগ্য।
রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে তাই নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্যও নির্দেশ করেছেন গবেষকরা। স্বাস্থ্যকর্মী এবং জনসাধারণ দুই শ্রেণির মানুষের মনেই ধারণা রয়েছে, পুরুষের তুলনায় নারীদের কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার হার কম। অথচ ব্যক্তি নারী নাকি পুরুষ তার ওপর ভিত্তি করে কখনো, কারো হৃদরোগ হয় না!
এমনকি নারীরা তাদের এ রোগ সম্পর্কে জানালেও যথাযথ গুরুত্ব দেন না। এক্ষেত্রে নারীরা চিকিৎসাও কম পান। হৃদরোগের চিকিৎসার জন্য তাদের কম রেফার করা হয় বলে জানিয়েছে গবেষণা দলটি।
এ গবেষণার প্রধান লেখক ও অধ্যাপক বিজয় কুনাডিয়ান বলেন, যুক্তরাজ্য ও সারা বিশ্বের নারীদের জন্য এক নম্বর প্রাণঘাতী রোগ হলো হৃদরোগ, বিশেষ করে করোনারি আর্টারি ডিজিজ বা ধমনীর রোগ। অথচ আজও নারীদের বেলায় এ রোগের লক্ষণ উপেক্ষা করার প্রচলন রয়েছে। নারীদের বলা হয়, তাদের দেহে এ ধরনের কোনো সমস্যা নেই; তাদের অন্য রোগের চিকিৎসা প্রদান প্রয়োজন, অথচ তারা ভোগেন হার্টের সমস্যায়।
বৈশ্বিক ডেটাবেজে উঠে এসেছে, কীভাবে বছরের পর বছর নারীরা পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন। ফলে হার্ট অ্যাটাকের পর মৃত্যুর ঝুঁকিও তাদের মধ্যে বেশি হয়।
অধ্যাপক বিজয় আরও বলেন, এ বিষয়টিকে আর অবহেলা করা যায় না। এখন কিছু একটা করতেই হবে। উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়া গেলে নারীদের জীবন রক্ষা সম্ভব। মানুষ ভাবে এটি পুরুষের রোগ। আমাদের তাই মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিতে বদল আনতে হবে। তাদের বোঝাতে হবে যে, নারীরাও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।’
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান