আপনি যখন ছোট ছিলেন তখন আপনার শীত, বর্ষা সব সময়ের যত্ন-আত্তির চিন্তাভাবনা আপনার মা-বাবা, দাদা-দাদি অথবা নানা-নানীর ছিল। এখন সময় এসেছে তাদের যত্ন নেওয়ার। কারণ, একটা সময়ের পর মানুষের শারীরিক ও মানসিক শক্তি সবই কমে যায়। তাই তাদের চাই বিশেষ যত্ন। কীভাবে যত্ন নেবেন, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সুদীপ রঞ্জন দেব।
শীতে যে কারণে বয়স্করা সবচেয়ে বেশি কষ্ট পায় তা হলো, শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যা বা শ্বাসনালীর প্রদাহ। শীতে ছড়িয়ে পড়া ফ্লু থেকে হতে পারে নিউমোনিয়া কিংবা অ্যাজমা। বেড়ে যেতে পারে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, অসটিওআর্থ্রাইটিস ও যেকোনো জয়েন্ট পেইনের জটিলতা। শীতের ঠান্ডা থেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখতে হবে। খেয়াল রাখবেন সবসময় যেন তারা পরিমিত শীতবস্ত্র পরেন। বিশেষ করে বুক, কান ও পা ঢেকে রাখতে হবে শীতের কাপড়ে। এ ছাড়া ঘুমানোর সময়, দিনে বা রাতে গলা ও কানে কাপড় কিংবা মাফলার জড়িয়ে রাখতে হবে।
কোনো কারণে যদি আপনার পরিবারের বয়স্ক মানুষকে বাইরে নিতে হয়, তাহলে যথেষ্ট পরিমাণে শীতের কাপড় পরিধান করা নিশ্চিত করুন। খুব বেশি সমস্যা না হলে শীতের দিনে শুধু শুইয়ে-বসিয়ে না রেখে কিছু কিছু হালকা ব্যায়াম যেমন ঘরের মধ্যে হাঁটাহাঁটি করান এবং হাত-পা নাড়াচড়া করার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করুন। এতে করে শরীরে তাপ উৎপন্ন হবে।
প্রবীণদের শীতের পোশাক হতে হবে আরামদায়ক। মোটা কাপড় পরার চেয়ে কয়েকটি পাতলা আরামদায়ক কাপড় নির্বাচন করুন এ ক্ষেত্রে। এতে ঠান্ডা কম লাগবে। কারণ, কাপড়ের স্তরে স্তরে বাতাস জমা থেকে শরীর থেকে তাপ বাইরে বের হতে বাধা দেবে।
শীতে বয়স্কদের ত্বক, ঠোঁট, হাত-পা, নখসহ নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে বাঁচাতে বিভিন্ন ক্রিমসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ ব্যবহার করুন।
শীতের শাকসবজি বয়স্কদের বেশি করে খেতে দিন। কারণ, গাজর, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ভিটামিন, মিনারেল অভাব পূরণ করে শীতে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে। গরম খাবারের পাশাপাশি গরম পানি খেতে দিন।
গরম পানি দিয়ে গোসল, অজু ও অন্যান্য কাজ করতে দিন। এতে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। এতে বাড়ির প্রবীণ মানুষটি আরাম পাবে।
শীতে বয়স্কদের সক্রিয় রাখুন। শীতের দিন শুধু শুয়ে-বসে না থেকে প্রবীণ মানুষকে ঘরের ভেতর হালকা ব্যায়াম করতে বলুন। ঘরের মধ্যে হাঁটাহাঁটিসহ হাত-পা নাড়াচড়া করতে বলুন। এতে শরীরে তাপ উৎপন্ন হবে, শীত কম লাগবে।
প্রবীণ ব্যক্তিটির ঘরে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখুন। যতটা সম্ভব ঘর গরম রাখুন। এতে শীত কম লাগবে, আরাম অনুভব হবে।