শ্বাসনালীর দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহজনিত সমস্যাই হচ্ছে হাঁপানি। শীত কালে এই সমস্যা বেশি হয়। কারণ এসময় বাতাসে ধূলাবালি ও দূষণ বেশি হয়ে থাকে। এছাড়াও হাঁপানি হওয়ার পেছনে আরও কিছু কারণ আছে। যেমন-
- এ রোগ জেনেটিক বা বংশগত কারণে হতে পারে। বংশে কারও এ রোগ থাকলে পরবর্তী প্রজন্মের যে কারও এতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
- শীতে কারও কারও অ্যালার্জি বাড়ে। আর সেই অ্যালার্জি থেকেও অ্যাজমা হতে পারে।
- শীতে বায়ু দূষণের মাত্রা বেড়ে যায়। এছাড়া পরিবেশগত বিভিন্ন কারণ যেমন- বায়ু দূষণ, ধোঁয়া, ধুলাবালি বা মাইট, পরাগ রেণু, কুকুর, বিড়ালসহ বিভিন্ন পোষা প্রাণীর লোম থেকেও হাঁপানি হতে পারে।
- কারও কারও ফুসফুসে সমস্যা থাকলে তারা যদি প্ররিশ্রমের কাজ করে বা ব্যায়াম করে কিংবা সিড়ি দিয়ে বেশি উপরে উঠে তাতেও শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি হতে পারে।
- অনেকের গর্ভাবস্থায় হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
- বিভিন্ন ব্যথানাশক ওষুধ, অ্যাসপিরিন, হেরোইন প্রভৃতির অতি ব্যবহারের কারণে হাঁপানি হতে পারে।
- যারা কারখানায় কাজ করে তাদের কীটনাশক, ঝালাই ও ঢালাই থেকে উৎপন্ন ধোঁয়া, ধাতু বা কাঠের ধূলিকণা, যানবাহন মেরামতে ব্যবহৃত আইসোসায়ানেট স্প্রে, আঠা, রঞ্জক, ধাতব কাজ করা তরল, তেল, ও ছাঁচ থেকে হাঁপানি হতে পারে।
প্রতিরোধের উপায়
হাঁপানির কোনো প্রতিকার নেই, তাই এই ব্যাধির আক্রমণ এড়াতে এর কারণগুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সাধারণত অ্যালার্জির কারণেই হাঁপানি হতে পারে। এছাড়া আরও যেসব কারণ আছে সেগুলো থেকে যথাসম্ভব দূরে রাখার মাধ্যমেই রোগ প্রতিরোধ করা যেতে পারে।
- যেহেতু অ্যালার্জি থেকে হতে পারে তাই খাবারে সতর্ক থাকতে হবে। যেসব খাবারে অ্যালার্জি হয় সে সব খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- বাইরে বের হবার সময় অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
- ধূমপান পরিহার করতে হবে।
- ধূলাবালি, ধোঁয়া, পরাগ রেণু, প্রাণীর লোম থেকে দূরে থাকতে হবে।
- ঘর সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বিছানা, বালিশ, মশারি বা ব্যবহৃত সব জিনিসপত্র পরিষ্কার রাখতে হবে।
- যেসব ওষুধে অ্যালার্জি হয় সেসব ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। বিকল্প ব্যবস্থা রাখতে হবে।
- যাদের হাঁপানির মাত্রা বেশি তারা প্রতি বছরে ইনফ্লুয়েঞ্জার ভ্যাকসিন নিতে পারেন। কারণ ভ্যাকসিন প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে আর ইনফ্লুয়েঞ্জা কম হলে অ্যাজমা প্রতিরোধ সহজ হবে।