সম্প্রতি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরের রোগী। ডেঙ্গু জ্বরে হঠাৎ করেই কমতে শুরু করে প্লাটিলেট। মানুষের রক্তে তিন ধরনের ক্ষুদ্র রক্তকণিকার মধ্যে সবচেয়ে ছোটটি প্লাটিলেট। যাকে বাংলায় অণুচক্রিকা বলা হয়। অণুচক্রিকার উৎপাদন হয় অস্থিমজ্জায়। সাধারণ মানবদেহে ডেঙ্গুতে প্লাটিলেট ১.৫ মিলিয়ন থেকে ৪ লক্ষ পর্যন্ত হয় এই প্লাটিলেট রক্ত জমাট বাঁধতে ও রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে সাহায্য করে।
ডেঙ্গু জ্বরে মূলত তিনটি ফেইজ থাকে। তিনটি ফেইজের মধ্যে দ্বিতীয় ফেইজে অর্থাৎ ডেঙ্গু হওয়ার ৬ষ্ঠ দিন থেকে রক্তের অণুচক্রিকা কমতে থাকে এবং তা ৯ম দিন পর্যন্ত কমে, তাই এই ফেইজকেই ক্রিটিক্যাল ফেইজ বলা হয়। তারপর আবার ১০ম দিন থেকে প্লাটিলেট বাড়তে থাকে।
প্লাটিলেট কমে যে কারণে
ভাইরাসজনিত জ্বরে প্লাটিলেট কমলেও ডেঙ্গুতে উল্লেখযোগ্য হারে কমতে দেখা যায়। কেন কমছে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন কারণ জানা যায় নি। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই বিষয়ে একাধিক মত প্রচলিত আছে। মনে করা হয়, দুটি কারণে ডেঙ্গু আক্রান্তের রক্তে অনুচক্রিকার পরিমাণ হ্রাস পায়।
প্লাটিলেট উৎপাদনকারী অঞ্চল হাড়ের মজ্জাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে যার ফলে ডেঙ্গুতে প্লাটিলেট গণনা কমে যায়।
ভাইরাস সংক্রমণের কারণে রক্তে কিছু বিষাক্ত পদার্থ উৎপন্ন হয়, যা প্লাটিলেট ধ্বংসের হার বাড়ায়। ফলে ডেঙ্গুতে প্রায় সব রোগীর রক্তেই নানা মাত্রায় প্লাটিলেট কমতে পারে।
প্লাটিলেট কমে গেলে করণীয়
প্লাটিলেট নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। প্লাটিলেট কমার সঙ্গে সঙ্গে যদি আরও কোন সমস্যা দেখা দেয় তখন বিপজ্জ্বনক। আর প্লাটিলেটের সংখ্যা ২০ হাজারের নিচে নেমে এলে কোনও প্রকার আঘাত ছাড়াই রক্তক্ষরণ হতে পারে। রক্তে প্লাটিলেটের সংখ্যা ১০ হাজারের নিচে নামা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। এসময় শরীরের যে কোনও জায়গা থেকে অনবরত রক্তপাত হওয়ার সর্বোচ্চ ঝুঁকি থাকে। তাই প্লাটিলেট দ্রুত কমলে ও সঙ্গে আরও জটিলতা দেখা দিলে তখন সতর্ক হতে হবে।