সাধারণত কেউ অসুস্থ হলে বা শরীরে রক্ত শূন্যতা দেখা দিলে অনেকেই শিং মাছ খাওয়ার পরামর্শ দেন। বলে থাকেন, শিং মাছ খেলে রক্ত বাড়ে। অসুস্থ হলে শিং মাছ বেশ উপকারি। সমাজে প্রচলিত এক কথাটি আসলেই ঠিক নাকি মিথ?
শরীরে রক্ত হওয়ার জন্য প্রয়োজন আয়রন, ফলিক এসিডের মতো উপাদান। এসব উপাদান খাবার থেকেই নেয় শরীর। তবে শিং মাছে রক্তের লোহিত কণিকা উৎপাদনের উপকরণ যেমন- আয়রন, ফলিক এসিড ইত্যাদি অনেক বেশি পরিমাণে থাকে এমন নয়। বরং লাল শাক, কচু শাক, কচুর লতি, প্রাণীর কলিজাতে বেশি পরিমাণে আয়রন থাকে, যা রক্তের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য খাওয়া যেতে পারে। সেদিক থেকে শিং মাছ লোহিত কণিকা উৎপাদনের বিশেষ উৎস কথাটি ঠিক না। এইটা মিথ।
আবার অন্যান্য মাছের তুলনায় শিং মাছের বিশেষ বা অনন্য কোনো শক্তির উপাদান বেশি আছে, বিষয়টা এমন নয়। ফলে অসুস্থতার সময় অন্যান্য যেকোনো মাছের মতোই শিং মাছ খেলেও শক্তি বাড়ে। শিং মাছের আলাদা কোনও গুণ নেই। সেদিক থেকে শিং মাছ খেলে বেশি উপকারি এইটাও ঠিক না। এইটাও মিথ।
শিং মাছে কি থাকে?
মাছ হিসেবে শিং মাছের চাহিদা অনেক। খেতে যেমন সুস্বাদু পুষ্টিতেও ভরপুর এই মাছ। প্রতি ১০০ গ্রাম শিং মাছে ক্যালরি থাকে ১২০ কিলোক্যালরি, ফ্যাট ২৮ কিলোক্যালরি, প্রোটিন ৯১ দশমিক ৫০ কিলোক্যালরি পাওয়া যায়। এ ছাড়া ভিটামিন এ থাকে ৪৯ দশমিক ৬০ আইইউ এবং ভিটামিন ডি এর পরিমাণ ১৯৭ আইইউ। এতে আরও আছে অনেক পুষ্টিগুণ। তবে শিং মাছে কার্বহাইড্রেট নেই বললেই চলে।
শিং মাছ আমাদের দৈনন্দিন প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে। এই মাছে ভিটামিন এ ও ডি বেশি থাকায় হাড় এর গঠন, দৃষ্টি ও ত্বকের জন্য উপকারী। তবে চাষকৃত শিং মাছ যাদের কিডনি জটিলতা আছে তাদের খেতে নিষেধ করে পুষ্টিবিদরা। কারণ শিং মাছের বৃদ্ধির জন্য মাছের খাবারে ম্যাঙ্গানিজ ব্যবহার করা হয়, যা কিডনির জন্য ক্ষতিকর।
সূত্র: দ্য ডেইলি স্টার বাংলা