সকালে ঘুম থেকে উঠে এক কাপ চা মুখে না দিলে যেন সকালটাই হতে চায় না অনেকের। আবার অফিস আদালতে চা খাওয়ার বেশ চল রয়েছে। চা খাওয়াকে আরও সহজ করতে চা পাতাকে ব্যাগ বন্দি করা হয়েছে। আর সেই ব্যাগ বন্দি চা বা টি-ব্যাগ গরম পানিতে চুবিয়ে নিলেই হয়ে গেল চা। কিন্তু বর্তমানে সেই টি-ব্যাগেই পাওয়া গেছে ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান মাইক্রোপ্লাস্টিকের।
মাইক্রোপ্লাস্টিক নিয়ে অনেক গবেষণা হচ্ছে। সেগুলোতে দেখা গেছে, সর্বত্রই মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ হচ্ছে। এই মাইক্রোপ্লাস্টিক উৎপন্ন হচ্ছে প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে। লাখ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবেশে ফেলে দেওয়া হয়। এর অনেকটাই মাইক্রোপ্লাস্টিকে পরিণত হয়। এসব অতিক্ষুদ্র কণা মাউন্ট এভারেস্টের চূড়া থেকে গভীর সমুদ্রের তলদেশ পর্যন্ত গোটা পৃথিবী দূষিত করেছে।
মাইক্রোপ্লাস্টিক মানবদেহের কোষের ক্ষতি করে। মানুষ খাবার ও পানি এবং নিশ্বাসের সঙ্গে এসব অতিক্ষুদ্র কণা গ্রহণ করে। এর কারণে পেটফাঁপা, অস্বস্তি, বমি বমি ভাবসহ গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয়। ক্যানসারও হতে পারে। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে মাইক্রোপ্লাস্টিক এবং ন্যানো প্লাস্টিক ফুসফুস, লিভার, লিঙ্গ, রক্ত, প্রস্রাব, মল, মায়ের দুধ এবং এমনকি অস্থায়ী ভ্রূণে প্রবেশ করছে।
মাইক্রোপ্লাস্টিক নানা ভাবে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। অনেকগুলো মাধ্যমের একটি হলো খাবার। খাবারের মধ্য দিয়ে এই উপাদান আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে আমাদের অত্যন্ত পরিচিত টি-ব্যাগে।
টি-ব্যাগে থাকা প্লাস্টিক প্রাকৃতিকভাবে পচে যেতে শত শত বছর সময় লাগতে পারে। যখন গরম পানিতে টি-ব্যাগ চুবানো হয়, তখন টি-ব্যাগে থাকা মাইক্রোপ্লাস্টিকের ক্ষতিকারক কোটি কোটি প্লাস্টিক কণা পানিতে মিশে যায়। এরপর এই চা পানের মধ্য দিয়ে চায়ে মিশে থাকা প্লাস্টিক কণার বেশ কিছু কণা মানুষের কোষে ঢুকতে পারে। তারপর এরা ধীরে ধীরে শরীরের নানান ক্ষতি সাধন করে। তাই টি-ব্যাগে চা খাওয়ার ক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।