গর্ভাবস্থা প্রত্যেক নারীর জীবনে বিশেষ সময়। এই সময় নারীর শরীরে নানা পরিবর্তন আসে। তাই এই সময় খুব সাবধানে থাকার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। সন্তান গর্ভে ধারণের পর থেকেই হাজারো নিয়ম মেনে চলতে হয়। বয়োজোষ্ঠ্যদের পরামর্শে কত নিষেধাজ্ঞা শুনতে হয়। এটা করা যাবে না, ওটা করা ঠিক নয়, এটা খাওয়া ভালো হবে না এমন আরও কত কী থাকে। সর্বোপরি গর্ভবতী মায়েদের নিজেদের যত্ন নিতে হয়। নিজের যত্ন তখনই হয় যখন শরীর ও মন ভালো থাকে। এই সময় নিজেকে পরিপাটি রাখলে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকে।
অনেকের ধারণা, গর্ভাবস্থায় স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করা ঠিক নয়। আবার আইব্রো প্লাক করলে বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে। এমন অনেক নিষেধাজ্ঞাই মানতে হয়। যার কোনো সত্যি-মিথ্যা বিচার করা হয় না। মনোবিজ্ঞানীরা গর্ভবতী নারীদের এমন ভ্রান্ত ধারণা থেকে দূর থাকতে বলেন। পাশাপাশি বিশেষ সময়টাতে নানা নিয়মের জালে না বেঁধে হবু মাকে সবকিছু উপভোগ করতে বলেন।
ত্বকরোগ বিশেষজ্ঞরা জানান, অনেক পরিবারে গর্ভবতী মাকে আইব্রো থ্রেডিং করতে নিষেধ করা হয়। তাদের ধারণা, এতে মায়ের এবং তার শরীরের ভেতরের বেড়ে ওঠা সন্তানের ক্ষতি হবে। কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। থ্রেডিং বা আইব্রো প্লাগের কারণে গর্ভাবস্থায় শিশুর কোনো ক্ষতি হয় না। এই সময়ে হবু মা নিজেকে ভালো রাখার জন্যে এটি করতে পারেন।
বিশেষজ্ঞরা আরও জানান, গর্ভাবস্থায় শরীরে অবাঞ্ছিত লোমও সরিয়ে ফেলতে পারেন। ওয়্যাক্সিং, থ্রেডিং কিংবা রেজার ব্যবহার করাতেও ক্ষতি নেই। এতে শিশুর কোনো ক্ষতি হবে না।
গর্ভাবস্থায় চুলে রং করা যাবে না এটিও ভ্রান্ত ধারণা। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, গর্ভাবস্থায় হাইলাইট বা রুট টাচ আপ করা যেতে পারে। এতে কোনো ক্ষতি হবে না। তবে হেয়ার ট্রিটমেন্ট করার আগে পরামর্শ নেওয়া ভালো। কেরাটিন এবং বোটক্সের মতো হেয়ার ট্রিটমেন্ট এড়িয়ে যেতে হবে। যাওয়াই শ্রেয়।
চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন, গর্ভাবস্থায় নারীদের শরীরে নানা পরিবর্তন দেখা দেয়। এই পরিবর্তনে অনেকে ডিপ্রেশনে পড়ে যান। তাই নিজের যত্ন নেওয়া আরও বেশি জরুরি এই সময়। সকালে ও রাতে সাধারণ স্কিন কেয়ার করতে পারেন গর্ভবতীরা। তবে রেটিনল ও স্যালিসাইলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ প্রোডাক্ট ত্বকে ব্যবহার করা যাবে না। বরং ঘরোয়াভাবে রূপচর্চা করাই ভালো। গর্ভাবস্থায় নারীকে সুন্দর পরিবেশে সুন্দরভাবে পরিপাটি হয়ে থাকতে হয়। তাই তাকে কোনো নিয়মে না বেঁধে বরং তার ভালোলাগাগুলো পূরণ করার চেষ্টা করুন।