এখন চলছে রসালো ফলের মৌসুম। এসময়ের ফলের মধ্যে আম খেতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ পাওয়া মুশকিল। আম স্বাদে-গন্ধে যেমন অতুলনীয়, তেমনি পুষ্টিগুণেও ভরপুর একটি ফল। মিষ্টি ও সুস্বাদু আম শ্বেতসারের ভালো উৎস। পাশাপাশি এতে আছে শর্করা, গ্লুকোজ, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, আঁশ, ভিটামিন বি-১, বি-২, থায়ামিন, ভিটামিন সি, আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং ফসফরাস। তাই তো পুষ্টিবিদেরা বলেন, মৌসুমি এ ফলের পুষ্টি সব বয়সী মানুষের জন্যই প্রয়োজন। এমনকি ডায়াবেটিস রোগীদেরও আমের পুষ্টিগুণ থেকে দূরে থাকার প্রয়োজন নেই। তবে তাদের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে পরিমাণের দিকে।
আমের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৫০ এর বেশি। গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কার্বোহাইড্রেটের সূচক। যত কম গ্লাইসেমিক রেটের খাবার খাওয়া হবে ততই শরীরের জন্য ভালো। যে আমে আঁশ বা ফাইবার বেশি, তার গ্লাইসেমিক ইনডেক্সও কম। ডায়াবেটিসের রোগী আম খেতে পারেন না, এ কথা ভুল। আমে থাকে কার্বোহাইড্রেট আর প্রোটিন। আর এ দুটি উপাদান মিলিয়ে খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের হঠাৎ সুগার বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কম। তবে ভরপেট খাওয়ার পর দুপুর বা রাতে আম খেলে তার রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়বে। তাই যাদের ওজন বেশি আর ডায়াবেটিস আছে, তারা সারা দিনে মাঝারি আকারের একটি আম খেতে পারবেন।
মিষ্টি আমে গোলমরিচ বা লেবুর রস মিশিয়ে জুস করে খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো।
আবার আমের সঙ্গে আরও কিছু ফল, যেমন আনারস বা নাশপাতি মিশিয়ে খেলে সরাসরি আমের মিষ্টির প্রভাব পড়বে না।
ডায়াবেটিস রোগীদের আরেকটি বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে সেটি হলো, সময় মেনে খাবার খাওয়া। দিনের বেলা আম খেলে তাতে থাকা ক্যালরি নানা কাজে ব্যায় হয়ে যায়। কিন্তু সন্ধ্যা বা রাতে আম খেলে সেই ক্যালরি সেভাবে খরচ হয় না। তাই দিনের বেলা বিশেষ করে সকালে বা দুপুরের আগে আম খাওয়া যেতে পারে।
আমে কোনো খারাপ চর্বি থাকে না। এমনকি ক্ষতিকর লবণও নেই। ১০০ গ্রাম একটি আমে ৭৯ থেকে ৮২ গ্রাম ক্যালরি পাওয়া যায়। এ ছাড়া একটি আমে ৭৫ থেকে ৮৫ শতাংশ পানি থাকে। জুসের চেয়ে তাজা আম খাওয়া বেশি উপকারী। আমে আঁশও থাকে। আমের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কিন্তু মাঝারি মাত্রার। এটি নির্ভর করে আমের জাতের ওপর।
কাঁচা আমও দারুণ উপকারী। কাঁচা আমে শর্করার পরিমাণ কম থাকে। দেহের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এটি বাইল অ্যাসিড নিঃসরণ বাড়ায়। দেহে নতুন রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে।