• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩০, ৩০ রজব ১৪৪৬

মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা বেশি ‍‍`লম্বা‍‍` হচ্ছে কেন, কী বলছে গবেষণা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২৫, ০৯:৪১ পিএম
মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা বেশি ‍‍`লম্বা‍‍` হচ্ছে কেন, কী বলছে গবেষণা
সূত্র: সংগৃহীত

জন্মগতভাবেই ছেলে ও মেয়ের শারীরিক গঠন ভিন্ন হয়। এমনকি উচ্চতার দিক থেকেও বেশ পার্থক্য থাকে। সাধারণত মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের উচ্চতা বেশি হয়। গত শতাব্দীতে এই উচ্চতা আরও দ্বিগুণ হারে বেড়েছে। সম্প্রতি এমনই তথ্য জানা গেছে বায়োলোজি লেটারস জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায়।

একটা বয়স পর্যন্ত ছেলে ও মেয়েদের উচ্চতায় ততটা পার্থক্য বোঝা যায় না। কিন্তু বয়ঃসন্ধিকাল পেরুলেই ছেলেদের উচ্চতা বাড়তে থাকে। অধিকাংশ ছেলেই দ্রুত লম্বা হতে থাকে। অন্যদিকে মেয়েদের উচ্চতা একটা সময়ের পর থেমে যায়। অবশেষে দেখা যায়, প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও পুরুষের উচ্চতায় রয়েছে  বেশ পার্থক্য।

বায়োলোজি জার্নালের গবেষণায় দেখা যায়, গত শতাব্দীতে পুরুষদের উচ্চতা নারীদের তুলনায় দ্বিগুণ গতিতে বেড়েছে। গবেষণার ফলাফল বিশ্বজুড়ে পুরুষ ও নারীদের উচ্চতার পার্থক্যের স্পষ্ট চিত্র উঠে এসেছে।

গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, এক শতাব্দীতে পুরুষদের গড় উচ্চতা বেড়েছে ৪.০৩ সেন্টিমিটার। অন্যদিকে নারীদের উচ্চতার বৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে কম ছিল। যা মাত্র ১.৬৮ সেন্টিমিটার।

মোট ৬৯টি দেশের প্রায় এক লাখ মানুষের উপর গবেষণাটি পরিচালিত হয়। বিভিন্ন জাতি ও অঞ্চলের মানুষদের উচ্চতার পরিবর্তন এবং এর পেছনের কারণগুলোকে গবেষণায় বিশ্লেষণ করা হয়। গবেষণায় দেখা যায়, টেস্টোস্টেরন এবং ইস্ট্রোজেন হরমোন উচ্চতার বৃদ্ধি এবং শরীরের গঠনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পুরুষদের শরীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। যার কারণে পুরুষদের  উচ্চতাও দ্রুত বাড়ছে।

গবেষণায় বলা হয়, কিশোর বয়সে পুরুষদের শরীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। যা পেশী ও হাড়ের বিকাশকে উৎসাহিত করে। একই বয়সে মেয়েদের শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোন বৃদ্ধির হার কমে যায়। যা সরাসরি বৃদ্ধির হরমোনকে প্রভাবিত করে। যার কারণে মেয়েদের উচ্চতা বাড়ার সময়কালও সীমাবদ্ধ থাকে।

এছাড়াও পুরুষ ও নারীদের জৈবিক গঠন এবং হরমোনাল সিস্টেমের পার্থক্য থাকে। যা তাদের উচ্চতার পার্থক্যের অন্যতম কারণ। পুরুষদের পেশী এবং হাড় গঠন শক্তিশালী হওয়ায় তাদের উচ্চতা বেশি সময় পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।

গবেষণায় আরও বলা হয়, পুরুষ ও নারীদের উচ্চতার বৃদ্ধির ক্ষেত্রে জিনগত বৈশিষ্ট্যও গুরুত্বপূর্ণ। অধিকাংশ পুরুষেরই জিনগত কারণে উচ্চতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেশি থাকে।

এছাড়াও বয়ঃসন্ধির সময়কালও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। মেয়েদের বয়ঃসন্ধি দ্রুত শেষ হয়। তাই তাদের শরীরের বৃদ্ধি বা উচ্চতা বাড়ার সময়সীমা সংক্ষিপ্ত হয়। অন্যদিকে পুরুষদের বয়ঃসন্ধি সময়কাল  তুলনামূলকভাবে দীর্ঘমেয়াদী থাকে। যা উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য বেশি সময় দেয়।

খাদ্যাভ্যাস, পুষ্টির অভাব বা প্রাচুর্য এবং দৈনন্দিন জীবনের অভ্যাসও উচ্চতার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে বলে জানাচ্ছে গবেষণা। পুরুষদের খাদ্য ও জীবনধারা নারীদের তুলনায় উন্নত থাকে। যা উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়।

গবেষকরা আরও জানান, উচ্চতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে জৈবিক, হরমোনাল এবং পরিবেশগত কারণও রয়েছে।  যা পুরুষ ও নারীদের উচ্চতার পার্থক্য তৈরি করে থাকে।

Link copied!