• ঢাকা
  • বুধবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৪, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ রবিউস সানি ১৪৪৬

ডিভাইসের নীলচে আলো ক্ষতি করে ত্বকেরও


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০২৪, ১০:২৩ পিএম
ডিভাইসের নীলচে আলো ক্ষতি করে ত্বকেরও
ছবি: সংগৃহীত

ডিজিটাল যুগে ডিভাইসের ব্যবহার বাড়ছে। প্রায় সব প্রয়োজনেই ডিভাইসের ব্যবহার হয়। টিভি, ল্যাপটপ, কম্পিউটার কিংবা মোবাইল ফোন যেকোনো ডিভাইস নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে যাচ্ছে। বিশ্বায়নের এই যুগে স্মার্টফোন, ট্যাবলেট পুরো জীবনধারাকেই বদলে দিয়েছে। জীবনকে অনেকটা সহজ করে দিয়েছে। তবে এসব ডিভাইস  দীর্ঘ সময় ব্যবহারে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

অতিরিক্ত মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ কিংবা টিভি দেখা হলে স্বাস্থ্যগত সমস্যা হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে ডিভাইসে থাকা নীল আলো চোখের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তবে জানেন কি, এই আলো ত্বকের জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, যারা দীর্ঘসময় ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করেন তাদের চোখের পাশাপাশি ত্বকেরও ক্ষতি হয়। টিভি, কম্পিউটার আর স্মার্টফোন থেকে ব্লু রে বা নীল রশ্মি নির্গত হয়। যা নীরবেই ত্বকের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির মতোই ডিজিটাল ডিভাইসের নীল রশ্মি প্রায় একই ক্ষতি করতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা আরও জানান, দিনে ২০ মিনিট প্রখর রোদে দাড়িয়ে থাকায় যে পরিমাণ ক্ষতি হয়, টানা ৮ ঘন্টা কম্পিউটারের সামনে বসলে একই রকম ক্ষতি হতে পারে। এর প্রভাবে হাইপারপিগমেন্টেশন, ত্বকের ইনফ্ল্যামেশন হতে পারে।

ডার্মাটোলজিস্ট ড. স্টেফানি উইলিয়ামস জানান, ডিভাইস থেকে বের হওয়া নীল রশ্মি ফ্রি র‍্যাডিক্যাল সৃষ্টি করে। যা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। এই আলোর কারণে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বেড়ে যায়। এতে ত্বকে সহজেই বয়সের ছাপ পড়তে পারে।

গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া যায়, সূর্য থেকে নির্গত ইউভি রশ্মির চেয়ে ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যবিশিষ্ট উচ্চশক্তিসম্পন্ন নীল রশ্মি দ্রুত ত্বকের উপরিভাগ দুর্বল করে এবং কোলাজেনের গঠন ভেঙে দেয়। যার ফলে অল্প বয়সে ত্বকে বলিরেখা হয়। এছাড়াও ডিভাইস ব্যবহারে অনিদ্রাজনিত সমস্যা বাড়ে। যা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। এই রশ্মি পরোক্ষভাবে মেলাটোনিন বা ঘুমের হরমোনের কাজে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। এতে ঘুম কম হয় এবং ত্বকের লাবণ্যতা কমে যায়।

ডিভাইসের এই নীল আলোর ক্ষতি থেকে ত্বককে বাঁচাতে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এর জন্য সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যেতে পারে। শুধুমাত্র বাড়ির বাইরে গেলেই সানস্ক্রিন ব্যবহার না করে, ঘরেও এটি ব্যবহার করতে হবে। দিনের তিন ঘণ্টা পরপর সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। এটি ডিভাইসের নীল রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করবে। সানস্ক্রিনে জিংক অক্সাইড, টাইটেনিয়াম অক্সাইড বা আয়রন অক্সাইড এই তিনটি উপাদান রয়েছে কিনা দেখে কিনুন। এই উপাদানগুলো ত্বকে নীল রশ্মির আক্রমণকে ঠেকাতে পারে। এছাড়াও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করে ত্বকের লাবণ্যতা ধরে রাখা সম্ভব হবে।

দীর্ঘসময় কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ব্যবহার প্রয়োজন হলে, ব্লু লাইট প্রটেক্টর শিল্ড ব্যবহার করুন। এটি নীল আলোর বিচ্ছুরণ অনেকটাই কমিয়ে দিবে। পাশাপাশি চোখের সুরক্ষাও দিবে। স্মার্টফোনে নাইট টাইম মোড ব্যবহার করুন। এটি নীলচে আলোর পরিবর্তে হলদে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটাবে। আর ডিভাইস ব্যবহারের সময় ন্যূনতম দূরত্ব বজায় রাখাও অত্যন্ত জরুরি।

ডিভাইস ব্যবহারের মাঝে বিশ্রাম নিন। একটানা কোনো ডিভাইস ব্যবহার ভালো নয়। ৩০ মিনিট কাজের পর ৫ মিনিট বিশ্রাম নিতে হবে। এতে নীল আলোর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

ডিভাইস ব্যবহারের মাঝে মাঝে প্রচুর পানি পান করুন। কারণ ডিভাইসের নীল আলো শরীরকে শুষ্ক করে দিতে পারে। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসও গড়ে তুলুন। এতে ত্বক ভালো থাকবে।

সূত্র: ওয়েবএমডি

Link copied!