• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

থানকুনি পাতার উপকারিতা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৩, ০১:২৭ পিএম
থানকুনি পাতার উপকারিতা

আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে অথবা নানা রোগের জন্য থানকুনি পাতা ব্যবহার হয়ে আসছে প্রাচীনকাল থেকেই। আজকাল আর ভেষজ ওষুধের ওপর তেমন একটা নির্ভরশীল নই আমরা। কিন্তু কোনোরকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই যদি ভেষজ উপায়ে রোগ নিরাময় করতে পারেন তাহলে কেনো এসব প্রাকৃতিক উপাদনের ওপর ভরসা রাখবেন না। তাই আমাদের উচিত বেশি বেশি প্রাকৃতিক উপাদানগুলোর গুণাগুণ সম্পর্কে জানা। তেমনই এক ঔষধি পাতা থানকুনি। চলুন আজ জেনে নেব থানকুনি পাতার উপকারিতা সম্পর্কে।

রক্তপ্রবাহের উন্নতি ঘটায়
নিয়মিত থানকুনি পাতার রস খেলে ব্লাড ভ্যাসেল এর যে দেয়াল রয়েছে তার ক্ষমতা যেমন বাড়বে তেমনি সারা শরীরে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের প্রবাহ বেড়ে যাবে। ফলে সারা শরীরের প্রতিটি অঙ্গে বিশুদ্ধ রক্ত পৌঁছে যাওয়ার কারণে রোগব্যাধির প্রকোপ করতে সময় লাগে না। এমনকি শরীরের কর্ম ক্ষমতা ও বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে পা ফুলে যাওয়া এবং পায়ের যন্ত্রণা হওয়ার মতো সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে

কোনোভাবেই যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না অথবা বেশি মাত্রায় ক্যালোরি রয়েছে, থানকুনি পাতার রস খেলে তাদের ওজন কমে যাওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ হয়। কারণ নিয়মিত থানকুনি পাতা খেলে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে ফলে শরীরের মেদ জমার সম্ভাবনা থাকে না। শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট না জমলে ওজন ও নিয়ন্ত্রিত থাকে।

ক্ষতের চিকিৎসায় 
ক্ষত স্থানে থানকুনি পাতা থেঁতো করে লাগালে দারুন উপকার পাওয়া যায়। কারণ এই পাতায় রয়েছে সেপোনিন নামের একটি উপাদান যা ক্ষত স্থানে রক্ত প্রবাহ বাড়িয়ে দেয় যে কারণে ক্ষত শুকিয়ে যেতে সময় লাগেনা। ক্ষতস্থানে কোনো ধরনের সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়।

রক্ত জমাট বাঁধার আশঙ্কা কমায়
থানকুনি পাতার রস শরীরে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। থানকুনি পাতায় উপস্থিত নানা মিনারেল এবং উপকারী উপাদান এর কারনে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার আশঙ্কা কমে।

মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ায় থানকুনি পাতা
নিয়মিত থানকুনি পাতা খাওয়া শুরু করলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পেন্টাসাক্লিক ট্রিটারপেনস নামক একটি উপাদান এর মাত্রা বাড়তে শুরু করে। যে কারণে স্মৃতি শক্তি ও বাড়ে। তাই বাচ্চাদের থানকুনি পাতার রস খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। থানকুনির রস খেলে ডিমেনশিয়ার মত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।

পাকস্থলী সুস্থ রাখে
থানকুনি পাতায় এমন একটি উপাদান রয়েছে যা পাকস্থলীর হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়, সেইসঙ্গে আলসার এর মতো রোগের প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয় পেট খারাপ, ডায়রিয়া, আমাশয় এর মতো রোগ প্রতিরোধ করতে ও সাহায্য করে এই পাতার রস।

শরীরের প্রদাহ কমায়
কোনো কারণে যদি শরীরের প্রদাহের পরিমাণ বেড়ে যায় তাহলে দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এর সঙ্গে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে আরও নানা ধরনের সমস্যা যেমন, জয়েন্টের ব্যথা, বারে বারে জ্বর আসা, শরীরে ক্লান্তি অনুভব হওয়া, মাথা ব্যাথা, ক্ষুধামন্দা এবং পেশিতে যন্ত্রণা হওয়ার মতো লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। এমন পরিস্থিতিতে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে নিয়ম করে প্রতিদিন থানকুনি পাতার রস খাওয়া উচিত।

মানসিক অবসাদ কমাতে সাহায্য করে 
যারা মানসিক অবসাদে ভুগছেন তাদের নিয়মিত থানকুনি পাতার রস খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত। এতে রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা সেরোটোনিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয় যে কারণে কর্টিসোল বা স্ট্রেস হরমোনের প্রভাব কমতে শুরু করে। এর ফলে ঘন ঘন এংজাইটি এট্যাক হবার সম্ভাবনা এবং স্ট্রেস লেভেল কমে।

ত্বক ও চুলের যত্নে 
চুল এবং ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত ও উজ্জ্বলতা বাড়াতে থানকুনি পাতার রস অনেক কার্যকরী। এর জন্য প্রতিদিন বা একদিন পর পর থানকুনি পাতার রস মধুর সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। এভাবে টানা ১ মাস খেলেই পরিবর্তন দেখতে পাবেন।

আমাশয় বা ডায়রিয়া রোধ করে

আমাশয় বা ডায়রিয়ার মতো সমস্যায় প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে থানকুনি পাতার রস বা থানকুনি পাতার ভর্তা গরম ভাতের সাথে খেলে অনেক উপকার পাবেন।

Link copied!