অ্যাপল সিডার ভিনেগার বর্তমানে যারা ওজন কমাতে চান খুবই পরিচিত একটা শব্দ। প্রাকৃতিকভাবে ফার্মান্টেড এই পানীয়র মধ্যে অ্যাসিটিক অ্যাসিড রয়েছে। এটি কয়েক শতাব্দী ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আপেলের জুস বা রস দিয়ে এই পানীয় তৈরি। আপেলে থাকা প্রাকৃতিক সুগার ফার্মেন্টেশন বা গাজন প্রক্রিয়ায় অ্যালকোহলে পরিণত হয় এবং এই অ্যালকোহল থেকে অ্যাসিটিক এসিড তৈরি হয়। এটি অত্যন্ত অম্লীয় এবং তীব্র গন্ধযুক্ত।
অ্যাপল সাইডার ভিনেগারের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো পাশাপাশি ওজন কমাতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত ওজন কমানো ছাড়াও অতিরিক্ত স্বাস্থ্য সুবিধা এই পানীয়কে স্বাস্থ্যকর করে তোলে। রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল করতে, বিপাকের উন্নতি এবং চর্বি ঝরায় এই পানীয়।
উপকারিতা
- সুষম খাবার, ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম ইত্যাদি বিষয় মেনে নির্দিষ্ট পরিমাণ অ্যাপল সিডার ভিনেগার গ্রহণ করলে এটি বিএমআর (বডি মেটাবলিক রেট) বাড়িয়ে ওজন কমাতে ভূমিকা রাখবে। তবে অবশ্যই নিয়ম মেনে খেতে হবে। সকালে খালি পেটে এই পানীয় খেলে দ্রুত ওজন কমে এবং এটি চর্বি বা মেদ পোড়াতে সাহায্য করতে পারে
- অ্যাপল সিডার ভিনেগার শরীরের ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়ানোর মাধ্যমে সুগার নিয়ন্ত্রণ করে।
- খাবার খাওয়ার আগে বা পরে কুসুম গরম পানিতে এক চামচ অ্যাপল সিডার ভিনেগার খেলে খাবার দ্রুত ও ভালোভাবে হজম হয়।
- অ্যাপল সিডার ভিনেগার রক্তের কোলেস্টেরল এবং উচ্চরক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
- সকালে অ্যাপল সিডার ভিনেগার খেলে তা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ পরিষ্কার করে।
- আপেল সাইডার ভিনেগার শরীরের পিএইচ ভারসাম্য ঠিক রাখে। সকালে আপেল সাইডার ভিনেগার পান করলে তা অন্ত্রের উন্নতি করে যা শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
তবে অ্যাপ্ল সাইডার ভিনিগারে অম্লের মাত্রা বেশি থাকায়, খাওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম মানা জরুরি। দিনে ১৫ মিলিলিটার বা বড় এক চামচের বেশি অ্যাপ্ল সাইডার ভিনিগার না খাওয়াই ভাল।
সতর্কতা
- অ্যাপ্ল সাইডার ভিনিগারে অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি। ফলে, তা হাড়ের ক্ষতি হতে পারে। হাড় দুর্বল এবং ভঙ্গুর হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
- সরাসরি গ্রহণ করলে তা খাদ্যনালী এবং অভ্যন্তরীণ খাদ্যের আস্তরণের ক্ষতি করতে পারে।
- যাদের অ্যাসিটিক পাথর তৈরি হয় কিডনিতে তারা অ্যাপল সাইডার ভিনেগার খাবেন না।
- অ্যাপ্ল সাইডার ভিনিগার শরীরের বর্জ্য পদার্থ বার করে দেয়। সেগুলি প্রস্রাবের মধ্যে দিয়ে শরীরের বাইরে বেরিয়ে আসে। ঘন ঘন প্রস্রাব পায়। এর ফলে শরীরে জলশূন্যতা দেখা দিতে পারে। গরমের দিনে এই সমস্যা মারাত্মক হতে পারে।
- যাদের শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা কম থাকে বা মাঝে মাঝে কমে যায় অর্থাৎ হাইপোক্যালেমিয়া আছে, তারা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাবেন না। কারণ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার পটাশিয়ামের মাত্রা কমিয়ে দেয়।
- দাঁতের জন্য কিন্তু ক্ষতিকর অ্যাপেল সিডার ভিনিগার। এনামেল নষ্ট করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। তাই ইষদুষ্ণ গরম পানিতে মিশিয়ে খান। সেই সঙ্গে মেশাতে পারেন দারচিনির গুঁড়োও।
- অ্যাসিড যুক্ত পানীয় বেশি পরিমাণে খেলে শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা হ্রাস পায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলা হয় `হাইপোক্যালিমিয়া`।