নিরামিষ ভোজীদের জন্য সুখবর। টানা ৮ সপ্তাহ নিরামিষ খেলে বয়সটা কমে যাবে, শারীরিক জটিলতা কমবে বলে প্রমাণিত হয়েছে এক গবেষণায়। সম্প্রতি এক সমীক্ষার ফলাফলে বিশেষজ্ঞরা জানান, আট সপ্তাহ আমিষ খাবার বাদ দিলে জৈবিক বয়সটা কমে যাবে অনেকটাই।
ভোজনরসিকরা আমিষ খেতে পছন্দ করেন। নিরামিষও খান। তবে খুবই কম। আবার নিরামিষ খেলেও তাতে আমিষ থাকবেই। এতে তৃপ্তি তো মেটে কিন্তু শরীরের বয়সটা বাড়তে থাকে। বয়সের ভারে শরীরে জটিলতাও দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে শুধু নিরামিষ খাওয়া মানুষগুলো বেশি সুস্থ থাকেন। এমনকি টানা দেড় মাস শুধুমাত্র নিরামিষ খেলেই শরীরের পরিবর্তনটা দেখা যাবে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, মানুষের জৈবিক বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিভিন্ন রোগ ভর করে। ডায়াবেটিস বা ডিমেনশিয়ার মতো রোগের ঝুঁকি থাকে। জৈবিক বয়স যখন কম থাকে তখন খাওয়া দাওয়ায় সচেতন হতে হয়। তাহলে বয়সটাও ধরে রাখা যায়।
বিএমসি মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত হয় গবেষণাটি। যা ২১ জোড়া প্রাপ্তবয়স্ক যমজ মানুষের উপর করা হয় । তারা identical twin অর্থাৎ একইরকম দেখতে। এদের একটি নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে রেখে দেখা হয়। vegan diet এর ফলে এদের কেমন পরিবর্তন আসে তা পর্যবেক্ষণ করা হয়।
গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, ডিএনএ-র এক প্রকার রাসায়নিক পরিবর্তন হয়। যাকে এপিজেনেটিক মডিফিকেশন বলা হয়। এই পদ্ধতিতে ডিএনএ নিজে বদলায় না, জিনের অভিব্যক্তি পরিবর্তন হয়।
যমজদের একজনকে আমিষ ডায়েট এবং আরেক জনকে নিরামিষ দেওয়া হয়। ৮ সপ্তাহ পর্যন্ত গবেষণা করা হয়। আমিষভোজীরা প্রতিদিন ১৭০ থেকে ২২৫ গ্রাম মাংস খেয়েছেন। ডায়েটে একটি ডিম এবং দেড় সার্ভিংস দুগ্ধজাত খাবার দেওয়া হয়। আর যমজদের আরেকজনের জন্য বরাদ্দ হয় শুধুই নিরামিষ খাবার। ৮ সপ্তাহ ধরে যারা নিরামিষ খেয়েছেন তাদের হার্ট, হরমোন, লিভারের জৈবিক বয়স বেশ কিছুটা কমে যায়। তাদের বিপাক ব্যবস্থাও তরুণদের মতো ছিল। তারা দ্রুত ওজনও কমান।
গবেষকরা জানান, আমিষভোজীদের চেয়ে নিরামিষ ভোজীদের জৈবিক বয়স (estimates of biological age) গেছে। একে epigenetic ageing clock বলা হয়।
তবে গবেষকদের একাংশ মনে করেন, খাওয়াদাওয়া, বয়স, ওজন সবকিছুর মধ্যে সম্পর্ক কতটুকু রয়েছে, তার সঠিক তথ্য জানতে আরও গবেষণার প্রয়োজন।
সূত্র: এবিপি নিউজ