বয়স বাড়লে শরীরে বিভিন্ন ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দেয়। তখনই সাপ্লিমেন্ট নিতে হয়। কিন্তু শুরু থেকেই যদি প্রয়োজনীয় ভিটামিন গ্রহণ করা হয়, তবে সাপ্লিমেন্টের প্রয়োজন হয় না। বিশেষ করে নারীদের শরীরে বেশি ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দেয়। কারণ অনেক নারী খাওয়া দাওয়া নিয়ে উদাসীন থাকেন। পরিবারের সবার দেখভাল করতে গিয়ে নিজের প্রতি অবহেলাই করেন। অথচ নারীদের শরীরে সবচেয়ে বেশি ভিটামিনের প্রয়োজন হয়। সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় তাদের শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিনের অভাব দেখা দিলে জটিল সমস্যা হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, শরীর সুস্থ রাখতে মোট ১৩টি ভিটামিনের প্রয়োজন হয়। প্রত্যেক ভিটামিনের কার্যকারিতাও ভিন্ন হয়। ভিটামিনের ঘাটতি হলে ক্লান্তি, দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, অস্থিরতা বাড়ে। তাই নারীদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিটামিন যুক্ত খাবার খেতে হবে। বিশেষ করে ২৫ বছর পার হলেই কয়েকটি ভিটামিন নিয়ম করে খাওয়াদাওয়ায় যুক্ত করতে হবে।
নারীদের জন্য যে ভিটামিনগুলোর প্রয়োজন হয়
ভিটামিন বি১২
ভিটামিন বি১২-এর অভাবে মানসিক অবসাদ বাড়ে। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ত্বক বিবর্ণ হয়। নিরামিষ খাবারে এই ভিটামিনের পরিমাণ কম থাকে। এক্ষেত্রে প্রাণিজ খাবার বেশি খেতে হবে। ডিম, মাশরুম, বিভিন্ন ধরনের মাংস ও মেটে, সামুদ্রিক মাছে ভিটামিন বি১২ থাকে। এছাড়াও দুধ, দই, ছানাতেও এই ভিটামিন পাওয়া যায়।
ভিটামিন সি
নারীদের ত্বকে বলিরেখা দ্রুত পরে। ভিটামিন সি-এর অভাবে এটি হয়। ত্বকের বলিরেখা দূর করতে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খেতে হবে। এই ভিটামিন মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাও বাড়ায়। মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে। ভিটামিন সি যুক্ত খাবারের মধ্যে রয়েছে লেবু, আমলকি, পেয়ারা, ব্রকোলি, স্ট্রবেরি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, পালং শাক। খাবারের তালিকায় এসব যোগ করুন। ভিটামিন সি এর ঘাটতি কমবে।
ভিটামিন কে
নারীদের হাড় দুর্বল থাকে। এটি আরও দুর্বল হয়ে পড়ে ভিটামিন কে এর অভাব হলে। হাড় ভেঙে যাওয়া বা হাড়ের ঘনত্ব কম হওয়ার অন্যতম কারণ এটি। এই ভিটামিন যুক্ত খাবার নিয়মিত খেলে হাড় শক্তিশালী হয়, গাঁটে গাঁটে ব্যথা দূর হয়। এর অভাবে নারীদের অস্টিয়োপোরেসিসের আশঙ্কাও বাড়ে। খাদ্যতালিকায় ব্রকোলি, পালং শাক, বরবটি যোগ করুন। এগুলো ভিটামিন কে-এর ভালো উৎস। এছাড়াও দুগ্ধজাত খাবার, মুরগির মাংস, সয়াবিন ও ডিম খেলেও এর অভাব পূরণ হবে।
ভিটামিন ই
ভিটামিন ই যুক্ত খাবার হাড়ের যত্ন নেয়। বন্ধ্যাত্বের সমস্যা, বার্ধক্যজনিত সমস্যা দূর করে। যাদের ত্বকের ও চুলের সমস্যা থাকে তারা ভিটামিন ই যুক্ত ক্যাপসুল খান। তবে বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রতিদিনের খাবারের মধ্যেই এই ভিটামিনের চাহিদা মিটতে পারে। পালং শাক, অ্যাভোকাডো, কাঠবাদাম, চিনেবাদাম খেলে ভিটামিন ই পাওয়া যাবে।
ভিটামিন ডি
ভিটামিন ডি শরীরের হাড় শক্তিশালী করে। পেশির যত্ন নেয়। অস্থিসংক্রান্ত নানা রোগ, অস্টিয়োপোরেসিস-এর মতো রোগের শঙ্কা কমায়। ডিমের কুসুমে ভিটামিন ডি রয়েছে। তবে ডিমের খোসায় ভিটামিন ডি-এর মাত্রা বেশি থাকে। এছাড়াও দুধ ও দুগ্ধজাত যে কোনও খাবার, মাংসের মেটে, মাছের ডিমে ভিটামিন ডি রয়েছে। আবার মাশরুম খেতে পারেন নিয়মিত। এতে ভিটামিন ডি এর অভাব দূর হবে।