রোজকার ধুলাবালি ও গরমের ঘাম থেকে চুলে স্যাঁতস্যাঁতে ভাব হয়। চুলকে ঝলমলে উজ্জ্বল করতে বাজারে পাওয়া বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শ্যাম্পু। সেগুলোই প্রতিনিয়ত আমরা ব্যবহার করি। কিন্তু শ্যাম্পু বা সাবানের মতো সুগন্ধি প্রসাধনী ব্যবহার মারাত্মক ক্ষতিকর বলে জানিয়েছে বিজ্ঞানিরা।
শুধু তাই নয়, প্রসাধনীর গন্ধ ত্বকের জন্য মারাত্মক বিপজ্জনক। এমনকি শ্যাম্পু-সাবানের মতো সুগন্ধিযুক্ত প্রসাধনীগুলোর কারণে অকাল মৃত্যুরও সম্ভাবনা থাকে বলে গবেষণায় প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
ভারতীয় পত্রিকা আনন্দবাজার জানায়, সম্প্রতি ‘এনভারনমেন্টাল পলিউশন’ নামক এক পত্রিকায় এই বিষয়ে গবেষণাপত্র প্রকাশ হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রসাধনীতে ফ্যালেট নামক একটি রাসায়নিক থাকে। এটি শরীরে যত বেশি মাত্রায় যাবে, ততই বেশি ক্ষতি করবে। এমনকি যে কোনো অসুস্থতা থেকে এটি মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায়। এ কারণে হৃদরোগ সংক্রান্ত মৃত্যুর প্রবণতাও বেড়ে যেতে পারে।
গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর লাখের অধিক মানুষের মৃত্যু হয় ফ্যালেটের কারণে। এর প্রভাবে ৫৫-৬৪ বছর বয়সীদের মৃত্যুর হার বেড়ে গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রসাধনীসামগ্রীর পাশাপাশি প্লাস্টিকের জিনিসেও ফ্যালেট রয়েছে। বিশেষ করে ছোটদের খেলনায় এটি অনেক থাকে। বিভিন্ন ধরনের সাবান, খাবারের প্যাকেট, জামা-কাপড়, আসবাবপত্রেও এই রাসায়নিকের উপস্থিতি বিদ্যমান।
বিশেষজ্ঞরা জানান, প্লাস্টিকের জিনিসে হাত দিয়ে তা মুখে দিলে, সেখান থেকে ফ্যালেট পেটে চলে যায়। ফ্যালেটের প্রভাব সরাসরি হরমোন তৈরির ক্ষেত্রে পড়ে। হরমোনের উপর মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নির্ভর করে। যার তারতম্যে হলে শরীরের বড় ক্ষতি হতে পারে। এর প্রভাবে ক্যানসার, হৃদরোগ, হাঁপানি, স্থূলতার মতো অসুখ বাড়তে পারে।
প্রতিকার সম্পর্কে গবেষণাপত্রে আরও জানায়, ফ্যালেটের হাত থেকে বাঁচতে মাঝেমধ্যেই হাত পরিষ্কার করা জরুরি। এছাড়া প্লাস্টিকের বাসন, বোতল, বা যেকোন জিনিস ব্যবহার করা এবং শিশুদেরকে খেলনা থেকে যথা সম্ভব দূরে রাখা গেলে কিছুটা সুরক্ষা পাওয়া যাবে। সেই সঙ্গে সুগন্ধী ছাড়া সাবান, শ্যাম্পু তুলনামূলক কম ক্ষতি করবে। এছাড়া প্রতিদিন এগুলো ব্যবহার না করাই ভালো।