পানির অপর নাম জীবন। সুস্থ দেহের জন্য় পর্যাপ্ত পানি খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। তবে আমাদের অনেকেরই অভ্যাস শুধু তৃষ্ণা পেলেই পানি পান করেন। গরমকালে একটু পরপর তৃষ্ণা পায়, তাই একটু পরপরই পানি পান করা হয়। কিন্তু শীতের সময় পানির তৃষ্ণা কম পায়। তাই পানি পান করার কথা ভুলেই যান অনেকে। এতেই হয় বিপদ!
শীতের সময় শরীরে পানির ঘাটতি বেশি দেখা যায়। তৃষ্ণা না পাওয়া পানি পান করা হয় না। শরীর পর্যাপ্ত পানিও পায় না। তখনই বিপত্তি হতে পারে শরীরের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতের সময় পানির ঘাটতি বেশি হওয়ায় শরীরের অনেক সমস্যা চড়াও হয়ে ওঠে। এর মধ্যে রয়েছে—
কোষ্ঠকাঠিন্য
কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যার প্রধান সমাধান হতে পারে পানি পান। বেশি পানি পানের অভ্যাস করুন। কোলন শরীর থেকে পানি শোষণ করে এবং তা শরীরের কঠিন বর্জ্য জমা রাখার প্রধান স্থান। পানির ঘাটতি হলেই মল থেকে কোলন পানি শোষণ করে নেয়। তখনই মল কঠিন হয়ে যায়। আর কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা যায়। বেশি করে পানি খেলে হজম ভালো হয়, মলও নরম থাকে।
ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ
শরীরে পানির ঘাটতি হলে মূত্রত্যাগের সময় জ্বালাভাব হয়। কোমরে ব্যথা ও অস্বস্তি বাড়ে। মূত্রস্থান শুকিয়ে চুলকুনি ভাব হয়। ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণও বেড়ে যায়। এসব সমস্যায় বেশি পরিমাণে পানি খাবেন। সেই সঙ্গে ভিটামিন সি খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
অ্যাসিডিটি বেড়ে যাওয়া
খাবার গলায় জমে রয়েছে, এমন ভাব হলে মনে করবেন অ্যাসিডির সমস্যা হচ্ছে এবং শরীরও শুষ্ক হয়ে গেছে। এই সমস্যা হয় পানির ঘাটতি থেকেই। বারবার হালকা গরম পানি পান করুন। অস্বস্তিবোধ কোনোভাবেই না কমলে ওষুধ খেতে পারেন।
মাথা ধরা ও ক্লান্তিভাব
শীতের সময় প্রায়ই মাথা ভার হয়ে থাকে বা মাথা ব্যথা করে। শরীরও বেশ ক্লান্ত লাগে। শরীরে পানির ঘাটতি হলেই এমনটা হয়। এটাই প্রথম লক্ষণ। সেই সঙ্গে চোখ ব্যথা, শরীরে অস্বস্তিও থাকে। শরীরে পানির ঘাটতি হলেই এগুলো হয়।
শুষ্ক ত্বক
পানির ঘাটতি হলে ত্বকের ওপর বেশি প্রভাব পড়ে। ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। তেল, সাবান, লোশন লাগানোর পরও ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে আসে না। ত্বক শুষ্ক হলে চামড়া ওঠা, চুল পড়ে যাওয়া, ঠোঁট ফাটা বেড়ে যায়। শরীরের পানিশূন্যতার প্রভাব হাত-পায়েও দেখা যায়।
বিষাক্ত পদার্থ জমে থাকে
শরীর থেকে যাবতীয় টক্সিন পানির মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। পানি কম খেলে বিষাক্ত পদার্থ শরীরেই জমে থাকে। তখনই ত্বক ও শরীরের বিভিন্ন সমস্যা বেড়ে যায়। ব্রণের সমস্যা, খাবার হজম না হওয়া, অ্যাসিডিটি এবং পেট খারাপের মতো অসুখ লেগেই থাকে।
মুখে দুর্গন্ধ
পানির ঘাটতি হলেই মুখের দুর্গন্ধ বেড়ে যায়। স্যালাইভা তৈরি এবং মুখের ভেতর জমে ওঠা ব্যাকটেরিয়া তাড়াতে পানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পানি কম খেলে কম লালা তৈরি হয় এবং মুখের মধ্যে জন্মানো ব্যাকটেরিয়া জিভে, দাঁতে, মাড়িতে জমে থাকে। তখনই দুর্গন্ধ হয়। মুখে দুর্গন্ধ হলে দিনে অন্তত ৫ লিটার পানি খাওয়ার অভ্যাস করুন।
সূত্র: হেলথ জোন