• ঢাকা
  • বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিশুদের আমাশয়ের কারণ ও প্রতিকার


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২১, ০৯:৫২ এএম
শিশুদের আমাশয়ের কারণ ও প্রতিকার
শিশুদের আমাশয়ের কারণ ও প্রতিকার

পেট অসুখ শিশুদের সাধারণ রোগ। শিশুদের খাওয়া দাওয়ায় একটু এদিক ওদিক হলেই পেট খারাপ হয়। তবে শিশুর মলের সঙ্গে অল্প-অল্প রক্ত বেরোতে শুরু করলে বাবা-মায়ের চিন্তা বেড়ে যায়। চিকিৎসকদের মতে, শিশুর এমন সমস্যার নাম আমাশয়। রক্ত-আমাশয়ও বলা যায় এই উপসর্গকে।

আমাশয় হলো অন্ত্রের ইনফেকশন বা সংক্রমণ। মূলত জীবাণুঘটিত রোগ। আমাশয়ের কারণে প্রাথমিকভাবে খুব কষ্ট হলেও এতে প্রাণহানীর কোনো আশঙ্কা থাকে না। তবে আমাশয় দীর্ঘদিন নিরাময় না হলে প্রাণহানীর শঙ্কাও থাকে।

কীভাবে বুঝবেন শিশুর আমাশয় হয়েছে? কিছু লক্ষণে বুঝে যাবেন আমাশয় হয়েছে। শিশুর মারাত্মক ডায়ারিয়া হবে। পেটে, বিশেষ করে নাভির চারপাশের এলাকায় প্রচণ্ড ব্যথা হবে। অনেকের ক্ষেত্রে সংক্রমণ বাড়াবাড়ি হলে জ্বরও হতে পারে। 

অনেক আমাশয় এমন সংক্রমণের সৃষ্টি করে, সেখান থেকে রক্তপাতও হয়। ফলে মলের সঙ্গে রক্ত বের হতে থাকে। আমাশয়ের অন্যতম লক্ষণ বারবার পেটে ব্যথা হয় এবং বাথরুম যাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। তবে পেট কখনো পেট পুরোপুরি পরিষ্কার হয় না।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাশয় মূলত দুই রকমের হয় তীব্র আমাশয় ও দীর্ঘস্থায়ী আমাশয়।

তীব্র আমাশয় ১০ থেকে ১৪ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়। পেটব্যথা হয়। জ্বর হয়। এক পর্যায়ে মলে রক্ত এবং মিউকাস দেখা যায়। চিকিৎসা না করানো হলে পুঁজও বেরোতে পারে।

দীর্ঘস্থায়ী আমাশয় দীর্ঘ সময় চিকিৎসা না করিয়ে ফেলে রাখলে এই সমস্যা হয়। শিশুদের তো বটেই বড়দেরও এই সমস্যা হতে পারে। সেক্ষেত্রে আমাশয় বহু মাসেও সারে না। শারীরিক অবস্থারও অবনতি হয়।

আমাশয় হওয়ার পেছনে যে কারণগুলো রয়েছে

  • সংক্রমিত খাবার থেকে হতে পারে।
  • সংক্রমিত জল বা অন্যান্য পানীয় থেকে হয়।
  • নোংরায় হাত দিয়ে সেই হাত ভালো করে না ধুলে আমাশয় হতে পারে।
  • বাচ্চা সাঁতার কাটার সময় পুলের বা পুকুরের সংক্রমিত পানি পেটে গেলে।
  • সংক্রমিত ব্যক্তির স্পর্শে গেলেও হতে পারে।
  • পানি থেকে হতে পারে। চিকিৎসকের কথায়, আমাশয় সংক্রমণের পিছনে পানির ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি।

শিশুদের আমাশয় প্রতিকারে শিশুর অভিভাবককে সচেতন হতে হবে। বিশেষজ্ঞরা আমাশয় হলে কিছু করণীয় বিষয়ে অবগত করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে—

  • আমাশয়  সাধারণত এক সপ্তাহের মধ্যে ঠিক হয়ে যায়। তবে আমাশয় হলে খাওয়ার স্যালাইন খাওয়াতে হবে।
  • পানিশূন্যতা  পূরণ করতে প্রচুর পরিমাণ তরল খাবার, যেমন ঠান্ডা পানি, চিনির শরবত, ডাবের পানি, ফলের রস ইত্যাদি খেতে হবে।
  • টয়লেট অতিরিক্ত পাতলা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
  • পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।

আমাশয় প্রতিরোধে বিশেষজ্ঞরা কিছু করণীয়ের কথাও জানিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে

  • বিশুদ্ধ পানি পান করাতে হবে।
  • দাঁত ব্রাশ করা পর বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করতে হবে।  
  • মলত্যাগের পরে হাত সাবান দিয়ে ভালো করে ধুতে হবে।
  • খাবার গ্রহণের আগে সাবান দিয়ে হাত ভালো করে ধুতে হবে।
  • বাইরের খাবার কম খাওয়াই ভালো। 
  • ফল বা সবজি খাওয়ার আগে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। 
  • ব্যবহৃত জিনিসপত্র পরিষ্কার রাখতে হবে। 
  • অসুস্থ শিশুর ডায়াপার পরিবর্তন করতে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
Link copied!