• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিশুদের বমি চিকিৎসায় ১২টি প্রতিকার


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২১, ০৩:৪২ পিএম
শিশুদের বমি চিকিৎসায় ১২টি প্রতিকার

জন্মের পর থেকেই শিশুদের বমি করতে দেখা যায়। নবজাতক শিশু কিংবা যেকোনো বয়সী বাচ্চার বমি হওয়া বা বমি ভাব হওয়া স্বাভাবিক ঘটনা। বাচ্চাদের বমি করা কোনো রোগ বা অসুস্থতা নয়। বরং কিছু ক্ষেত্রে এটি শিশুর প্রতিক্রিয়ার ধরনও হতে পারে। ওষুধ খাওয়ার পর, আবার কখনো অতিরিক্ত খাবার খাওয়া হলে, কিংবা অপছন্দের খাবার খেলে বাচ্চাদের বমি করা বা বমি ভাব হতে দেখা যায়।

শিশুদের বমি হলে কি করণীয়

বাচ্চাদের এই বমির প্রবণতা কমানোর জন্য় বমি উপসর্গগুলো নিরাময় করতে হবে। ঘরোয়া বা প্রাকৃতিক উপায়ে কীভাবে বাচ্চাদের বমি কমানো যাবে, এর কয়েকটি উপায় জেনে রাখুন।

তরল খাবার বেশি খাওয়াবেন

বমি হলে শিশু ক্লান্ত হয়ে পড়ে। শিশুর হারিয়ে যাওয়া শক্তি ফেরাতে তরল খাদ্য চালিয়ে যায়। বমি হওয়ার পরে কমপক্ষে ১২ ঘণ্টা বাচ্চাকে তরল খাবার দিন। ডাক্তাররা এই সময় শিশুদের ভারী বা শক্ত খাবার দেওয়ার বিষয়ে সংযত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। সন্তানকে আবারও স্বাভাবিক খাবার খাওয়ানো শুরুর আগে তার হজম প্রক্রিয়াটিকে আগের অবস্থানে নিয়ে আসুন। শিশুর বমি ভাব বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত একেবারে অনেক খাবার খাওয়াবেন না। একটু পর পর খাবার দিন, যা সহজে হজমে সহায়তা করবে।  

আদার রস-মধু ব্যবহার

বমি থামাতে আদা ভালো কাজ করে। সামান্য় আদার রসের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা মধু যোগ করে নিন। এবার এটি বাচ্চাকে খাওয়ান। এতে শুধু বমি নিরাময়ই হবে না, এটি হজম প্রক্রিয়াতেও সাহায্য করবে।

পুদিনার রস

পুদিনা পাতার রস বমি কমাতে সাহায্য করবে। কয়েকটি তাজা পুদিনার পাতা নিয়ে রস বের করে নিন। এক চামচ পুদিনার রসের সঙ্গে এক চামচ লেবুর রস মেশান। মিষ্টি স্বাদ দিতে সামান্য মধু যোগ করুন। এছাড়া বাচ্চা পছন্দ করলে তাকে তাজা পুদিনা পাতা চিবোতে দিতে পারেন।

দারুচিনি চা খাওয়াতে পারেন

দারুচিনি পেটকে প্রশমিত এবং শান্ত করতে সাহায্য করে। এটি বমি থেকে উপশম দেয়। এক কাপ পানিতে এক চা-চামচ দারুচিনি গুঁড়ো দিন। এটি কয়েক মিনিটের জন্য ফুটিয়ে নিন। এরপর ছেঁকে এই চায়ের সঙ্গে মধু যোগ করে আপনার সন্তানকে পান করাতে পারেন।

ভাতের মাড় বমি কমাবে

বাচ্চাদের গ্যাস্ট্রাইটিসের কারণে বমি হলে চিকিৎসায় ভাতের মাড় খাওয়াতে পারেন। সাদা চালের ভাত রান্না করে এর মাড় ঝড়িয়ে নিন। এরপর চামচ দিয়ে হালকা গরম অবস্থায় বাচ্চাকে এটি পান করান।

এলাচ দানা

শিশুদের বমি রোধে এলাচ কার্যকর। এলাচ দানা আপনার সন্তানের পেটে শান্তি দেবে, যা বমির ভাব কমাবে। অর্ধেক চা-চামচ এলাচ দানা নিয়ে সেগুলো গুঁড়ো করে নিন। এবার এর সঙ্গে সামান্য চিনি বা মধু যোগ করে তা আপনার সন্তানকে খাওয়াতে পারেন। বমি থেকে স্বস্তি পাবে।

লবঙ্গ বেশ সহায়ক

বমি হওয়া থেকে পরিত্রাণ পেতে লবঙ্গ সত্যি দারুণ কাজ করে। বাচ্চাকে লবঙ্গ চিবোতে দিন। লবঙ্গ কাঁচা খেতে না পারলে এক কাপ পানিতে ফুটিয়ে চা বানিয়ে পান করুন। লবঙ্গ চায়ের সঙ্গে এক চা চামচ মধু যোগ করেও খাওয়াতে পারেন।

মৌরি বীজের ব্যবহার

শিশুদের বমির জন্য কার্যকর প্রাকৃতিক প্রতিকার হলো মৌরি বীজ। এতে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা শিশুর বমি নিরাময় করে। এক কাপ পানিতে এক চা-চামচ মৌরি বীজ নিয়ে ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন। এবার এটি ছেঁকে আপনার বাচ্চাকে পান করান। দিনে ৩ থেকে ৪ বার এই পানীয়টি পান করাতে পারেন।

অ্যাপেল সিডার ভিনেগার

অ্যাপেল সিডার ভিনেগারের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা বমি প্রতিরোধ করে। ভিনেগার পেটকে প্রশমিত করতে অত্যন্ত কার্যকর। এটি দেহকে বিষমুক্ত রাখে। এক গ্লাস পানির মধ্যে এক চা-চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার এবং মধু যোগ করে আপনার বাচ্চাকে খাওয়ান। সারা দিন ধরে একটু একটু করে খেতে দিন।

পেঁয়াজ-আদার রসের সংমিশ্রণ

পেঁয়াজ হচ্ছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক। পেঁয়াজের রসের সাহায্যে বাচ্চার বমির ভাব কমাতে পারেন। সমপরিমাণে পেঁয়াজ এবং আদার রস ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। অর্গানিক বা জৈব মধুও মেশাতে পারেন এতে। আপনার বাচ্চাকে দিনের মধ্যে বেশ কয়েকবার এই রসটি খাওয়ান।

গোটা জিরা

এই মসলাটি হজমের সমস্যা নিরাময়ে অত্যন্ত কার্যকর। এটি আপনার বাচ্চাকে বমি হওয়ার থেকে স্বস্তি দেবে। এক চা-চামচ জিরা শুকনো খোলায় ভেজে গুঁড়ো করে নিন। এবার এই জিরা গুঁড়ো গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে আপনার বাচ্চাকে খাওয়ান। এর সঙ্গে এক চিমটে জায়ফল গুঁড়ো ছিটিয়ে নিতে পারেন। এছাড়া জিরা গুঁড়োটিকে এলাচ গুঁড়ো এবং মধুর সঙ্গে মিশিয়ে আপনার বাচ্চাকে খেতে দিন।

ল্যাভেন্ডার অয়েল

ল্যাভেন্ডার অয়েল সুগন্ধযুক্ত তেল। যা বাচ্চাদের অসম্ভব বমিতে ভোগা থেকে কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। সতেজ করে তোলে। এই তেল মাথা ধরা নিরাময় করে। বাচ্চাদের শান্তিপূর্ণ ঘুম দেয়। কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার তেল সন্তানের বালিশে অথবা তার রুমালের মধ্যে দিয়ে দিন। এই তেলে গন্ধ নাকে শুঁকতে দিন। বমিভাব কমে যাবে।

এসব ঘরোয়া উপায়েই বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বমি ভাব বা বমি করার ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এরপরও যদি আপনার বাচ্চার ওপর এগুলো প্রভাব না ফেলে তবে ডাক্তারের সঙ্গে আলোচনা করে নিন।

 

সূত্র: ফাস্ট ক্রাই পেরেন্টস

Link copied!