বিশ্বসেরা পানীয়ের মধ্যে চা এখন অন্যতম। সকালে ঘুম থেকে উঠে রাতে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত চা যেন নিত্য সঙ্গী। ক্লান্তি দূর করতে সারা দিন অনায়াসেই ১ থেকে ২ কাপ চা খাওয়া হয়েই থাকে। কোনো নাশতার আয়োজন নেই চা দিয়েই আড্ডাটা জমিয়ে নেওয়া যায়।
বাজারে সাধারণত দুই ধরনের চা পাওয়া যায়। যারা লিকার বা রং চা খান, তারা মূলত দুই ধরনের চা কিনে থাকেন। পাতা চা, না হয় গুঁড়ো চা। যারা কড়া লিকার খেতে পছন্দ করেন, তাদের পছন্দ গুঁড়ো চা। আর যারা চায়ের সুগন্ধ উপভোগ করতে চান, তারা পাতা চা বেশি পছন্দ করেন।
দুই ধরনের চায়েই গুণগত মান ভিন্ন। এগুলোর প্রস্তুতের ওপর গুণগত মান অনেকটাই নির্ভর করে। গুঁড়ো চা প্রস্তুত করতে খুব কম সময় লাগে। বাগান থেকে পাতা সংগ্রহের পর যন্ত্রের মধ্যে চা পাতা দেওয়া হয়। সেখানে সেগুলো শুকিয়ে গুঁড়ো করা হয়। চা পাতার বেশ কিছু উপাদান এতে থেকে যায়। যেগুলো এর কড়া স্বাদ দেয়।
অন্যদিকে পাতা থেকে চা প্রস্তুত করতে দীর্ঘ সময় লাগে। বাগান থেকে পাতা তোলার পর কিছু উপাদান পাতন প্রক্রিয়ায় বাদ দেওয়া হয়। এতে এর কড়া ভাব কেটে যায়। পরে এগুলো শুকিয়ে নেওয়া হয়। প্রয়োজনে কিছুটা সেঁকেও নেওয়া হয়ে থাকে।
পাতা চায়ে ক্যাটেচিন, আইসোফ্লাভন, পলিফেনলের মতো যৌগ থাকে। এর মধ্যে গুঁড়ো চায়ে ক্যাটেচিন, আইসোফ্লাভনের মাত্রা খুব কম। পলিফেনলের পরিমাণ পাতা চায়ের মতোই।
বিশেষজ্ঞরা বলছে, পাতা চা স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকারী। পাতা চা ও গুঁড়ো চায়ের স্বাস্থ্যগুণের কথা জানব আজকের আয়োজনে।
- পাতা চায়ে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাত্রা গুঁড়ো চায়ের চেয়ে অনেক বেশি। এটি শরীরকে বেশি মাত্রায় দূষণমুক্ত করে।
- পাতা চায়ে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপস্থিত, যা মস্তিষ্কে রক্ত ও অক্সিজেনের সরবরাহ বৃদ্ধি করে। মস্তিষ্ককে সচল রাখে ৷
- পাতা চায়ে হদ্রোগের আশঙ্কা কমায়। গুঁড়ো চায়ের এমন কোনো গুণ নেই।
- পাতা চা হার্টের রক্ত সরবরাহ বাড়ায়, হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখে। উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
- পাতা চা স্নায়ুকে আরাম দেয়। মন শান্ত করে। গুঁড়ো চা খুব অল্প পরিমাণে হলেও স্নায়ুর উত্তেজনা বাড়িয়ে দেয়।
- প্রতিদিন চা পান করলে ইউ ভি রেডিয়েশনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বকের কোষগুলো রক্ষা পায়। ফলে ত্বকের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
- ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে পাতা চা উপকারী। এটি কোষ থেকে সাধারণের তুলনায় প্রায় ১৫ গুণ বেশি ইনসুলিন নিঃসৃত করে এবং রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
- পাতা চায়ে ট্যানিনের পরিমাণ তুলনায় কম থাকে। তাই ঘুম কমায় না এই চা। গুঁড়ো চা বেশি পরিমাণে খেলে ঘুমের সমস্যা হতে পারে।
- গুঁড়ো চা খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যা হতে পারে। পাতা চা খেলে তার আশঙ্কা কম।
সূত্র: আনন্দবাজার