বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সময়ই রূপ পাল্টেছে করোনাভাইরাস। বিশ্বে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে চলার মাঝেই নতুন ভ্যারিয়েন্ট মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। ভিন্ন ভিন্ন রূপ নিয়ে করোনাভাইরাস মানুষকে সংক্রমিত করছে। এবার করোনার আরও একটি নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। দেশটিতে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের নাম ‘ওমিক্রন’।
শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, দক্ষিণ আফ্রিকা ও বতসোয়ানায় করোনাভাইরাস নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে জরুরি বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে নতুন ভেরিয়েন্টের নামকরণ করা হয়। এই ধরনটি ‘উদ্বেগজনক’।
ডব্লিউএইচও’র বিবৃতিতে আরও জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বি.১.১.৫২৯ ধরনকে উদ্বেগজনক হিসেবে আখ্যায়িত করছে। এটার নতুন নাম দেওয়া হয়েছে ওমিক্রন। এই ধরনটির মাধ্যমে করোনার সংক্রমণ নতুন করে বিস্তারের ঝুঁকি রয়েছে।
ডব্লিউএইচ’র কর্মকর্তা মারিয়া ভ্যান কারখোভে বলেন, " নতুন ধরণ নিয়ে এখনো বিশেষ কিছু জানা যায়নি। তবে এতবার মিউটেশনের মধ্য দিয়ে যাওয়া মানেই ভাইরাসের কার্যক্ষমতায় এর প্রভাব পড়তে পারে।"
নতুন ধরনটি দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়াও বসতোয়ানা, ইসরায়েল ও হংকংয়ে পাওয়া গেছে। এছাড়াও ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে বেলজিয়ামে এখন পর্যন্ত একজনের শরীরে শনাক্ত হয়েছে।
করোনাভাইরাসের ডেলটা ধরনের দাপটে ইউরোপের দেশগুলোতে ভাইরাসের চতুর্থ ঢেউ চলছে। এর মধ্যেই শনাক্ত হলো ওমিক্রন। এটি ভয়াবহ ধরনগুলোর একটি হিসেবে ধরা হচ্ছে বলে জানায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিবিসি জানায়, ওমিক্রন শনাক্তের পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নতুন করে ভ্রমণের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে। আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি দেশ থেকে ফ্লাইট চলাচলের ওপর জরুরিভিত্তিতে নিষেধাজ্ঞা এনেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলো।
এছাড়াও যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশগুলো এবং সুইজারল্যান্ডও দক্ষিণ আফ্রিকার কিছু দেশ থেকে সাময়িকভাবে ফ্লাইট বন্ধ করা হয়েছে।
ইউরোপিয়ান কমিশনের মুখপাত্র এরিক মেমার জানান, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ২৭টি দেশের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান জরুরি এক বৈঠক শেষে নিষেধাজ্ঞা জারি করার সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। বেলজিয়ামে নতুন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত এক রোগী শনাক্ত হওয়ার প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
জাপান জানায়, শনিবার থেকে আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা অধিকাংশ দেশের নাগরিকদের ১০ দিন কোয়ারেন্টিন করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে তাদের মোট ৪ বার পরীক্ষা করাতে হবে।
এদিকে যেসব দেশ তাড়াহুড়ো করে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তাদের 'ঝুঁকি যাচাই ভিত্তিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে' পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।