শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। ছোটবেলাতেই তাদেরকে বিভিন্ন রোগের টিকা দেওয়া হয়। এরমধ্যে যক্ষ্মা রোগ নিরাময়ের টিকাও দেওয়া হয় শিশুদের। তবুও কিছু শিশু যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়। বিশেষজ্ঞরা জানান, শিশুদের ওজন কমে যাওয়া বা না বৃদ্ধি পাওয়া যক্ষ্মা রোগের কারণে হয়। এই রোগে শিশুদের খাবারে অরুচি আসে, শিশু দুর্বল হয়ে পড়ে, সারাদিন শুয়েই থাকে এবং মেজাজও খিটখিটে হয়ে যায়।
শিশুর দুই সপ্তাহের বেশি সময় জ্বর থাকলে, কাশি, কফ এবং ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা থাকলে যক্ষ্মার পরীক্ষা করতে হবে। এই রোগে জ্বর সাধারণত একশ ডিগ্রি হয়। রাতে শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সংস্থা সিডিসির তথ্য মতে, যক্ষ্মা সংক্রামক রোগ। মাইকোব্যাক্টেরিয়াম ব্যাকটেরিয়া এই রোগের কারণ। যক্ষ্মা সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে এবং তার হাঁচি, কাশি বাতাসে ছড়িয়ে পড়লে অন্যদের আক্রান্ত করতে পারে এই রোগটি।
শিশুদের যক্ষ্মা রোগে করণীয়
শিশুদের ক্ষেত্রে প্রথমে রোগ নির্ণয় করতে হবে। অধিকাংশ শিশুই এই রোগ শনাক্ত করা যায় না। বিশেষজ্ঞরা জানান, শিশুদের নমুনা পরীক্ষা করার সুযোগ না থাকলে লক্ষণ মিলে গেলেই চিকিত্সা শুরু করতে হয়। এই রোগের চিকিৎসা সাধারণত ছয় সপ্তাহের হয়। মোট চারটি ওষুধ দেওয়া হয়। শিশুদের খাওয়ানোর সুবিধার্থে লিকুইড ওষুধ দেওয়া হয়। এই ওষুধ যক্ষ্মার জীবাণু প্রতিরোধ করে। ওষুধের কোর্স সম্পন্ন না করলে জীবাণু পুরোপুরি ধ্বংস হয় না।
চিকিৎসকরা জানান, এই রোগে ওষুধ খাওয়ানোর পাশাপাশি শিশুর ঘরের পরিবেশের যত্নশীল হতে হবে। ঘরে বাতাস প্রবেশ করে সেখানে শিশুকে রাখতে হবে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার, সুসম খাবার খাওয়াতে হবে। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত ঘুমও প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, কারো যক্ষ্মা রোগ হয়েছে, তাদের থেকে অবশ্যই শিশুদের দূরে রাখুন। প্রয়োজনে স্কুল বন্ধ রাখুন। পরিবারের কারো এই রোগ হলে তাকে এক ঘরে রাখুন। শিশুদেরকে সেই ব্যক্তি থেকে অবশ্যই দূরে রাখবেন। অন্যথায় শিশুকে যক্ষ্মা রোগের ওষুধ খেতে হবে। এছাড়াও শিশুদের অবশ্যই টিকা দিতে হবে। এতে যক্ষ্মা রোগের মারাত্মক উপসর্গ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।