দেশে ঘরে ঘরে এখন ডায়াবেটিস রোগী রয়েছে। বলা যায়, ডায়াবেটিস এখন জাতীয় রোগে পরিণত হয়েছে। শরীরে ইনসুলিনের উৎপাদন কমে গেলে বা ইনসুলিন উৎপাদন হওয়ার পরও ঠিকমতো কাজ না করলেই ডায়াবেটিস রোগ হয়। কারণ ইনসুলিনের অভাবে শরীরে অতিরিক্ত গ্লুকোজ হতে থাকে। খালি পেটে যদি গ্লুকোজের মাত্রা ৭-এর বেশি থাকলে এবং খাবার খাওয়ার পর ১১-এর বেশি থাকলে সেই অবস্থাকে ডায়াবেটিস বলে।
ডায়াবেটিস রোগের কারণেই ইনসুলিন শব্দটার সঙ্গে অনেকেই পরিচিত। ইনসুলিন দিয়ে ব্লাড সুগারের মাত্রা কমানো যায়। এছাড়াও ইনসুলিন রক্তে সুগারকে কোষে বিপাকিত করে এবং শরীরের সঞ্চিত শক্তিকে অক্সিজেনের সঙ্গে একত্রিত করে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, ইনসুলিন প্রধান স্টোরেজ হরমোন। ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে এটি প্রধান মাধ্যমে। শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা ঠিক রাখতে পারলে ব্লাড সুগারও নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে অত্যাধিক ইনসুলিন স্বাস্থ্যের জন্য় ক্ষতিকর হতে পারে।
অতিরিক্ত ইনসুলিনে শরীরে যে ক্ষতি হয়
- শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা বেশি থাকলে ওজন কমানোর চেষ্টা করে লাভ নেই। বরং ইনসুলিন বেশি মাত্রায় হলে মস্তিষ্কে শুধুই খাবারের চিন্তা বাড়ে। রক্তে সুগারের ক্ষুধা বাড়ায়, কোলেস্টেরলও বাড়তে থাকে।
- ইনসুলিনের মাত্রা বেশি হলে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিও বাড়ে। প্রদাহ এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বাড়ায়। মগোজাস্ত্রকে দিনের পর দিন শুধু ব্লান্ট করে দিতে পারে।
- ইনসুলিন বেড়ে গেলে হরমোনাল সমস্যাও বাড়ে। ত্বকে ব্রণ বেড়ে যেতে পারে, চুল পড়াও বেড়ে যায়। মেজাজে পরিবর্তন আসে।
- রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা বেড়ে গেলে কোষগুলো পুষ্টি পেতে সমস্যা হয়। থাইরয়েডের ভারসাম্যও নষ্ট হয়।
ইনসুলিনের মাত্রা যেভাবে ঠিক রাখবেন_
- ইনসুলিনের মাত্রা ঠিক রাখতে সবার আগে খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনতে হবে। ময়দা ও চিনিজাতীয় খাবার খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে।
- সকালে খালি পেটে প্যাকেটজাত খাবার কিংবা লজেন্স অথবা সোডা জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না।
- ফাইবার জাতীয় খাবার বেশি খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। এতে ইনসুলিন মাত্রা ঠিক থাকে।
- ফ্যাটি অ্যাসিড কিংবা ওমেগা থ্রি যুক্ত খাবার খাবেন। এটি ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণে রাখবে।
- প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা ঘুম ঠিক রাখুন। শরীরের সর্কেডিয়ান রিদম কাজ করতে এটি সহায়তা করবে।
- স্ট্রেস বা মানসিক চাপ থাকলে ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। উদ্বেগ কমাতে হবে। মানসিক চাপও কমাতে হবে। না হলে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না।
- নিয়মিত শারীরিক চর্চা করুন। প্রয়োজনে যোগাসন করতে পারেন। শরীরকে সচল রাখুন। একস্থানে অনেকক্ষণ বসে থাকবেন না।