টলিউড ইন্ডাস্ট্রির কাঙিক্ষত মুখ অনির্বাণ ভট্টাচার্য। তার অভিনয় জীবনের শুরু হয়েছিল থিয়েটার দিয়ে। কিন্তু এখন ক্রমশ সিনেমা আর ওয়েব সিরিজে ব্যস্ত তিনি। এবার শুরু করলেন পরিচালনা। সবমিলিয়ে দম ফেলানোর ফুসরত নেই তার। সেই ব্যস্ততার মাঝে সংবাদ প্রকাশের কথা হলো তার সঙ্গে। কথায় কথায় জানালেন পরিচালনায় আসার কারণ, অভিনয় আর ব্যক্তিগত নানা বিষয়।
সংবাদ প্রকাশ: অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য এবার পরিচালকরূপে হাজির হচ্ছেন। এটা কী পূর্বপরিকল্পিত ছিল?
অনির্বাণ: সত্যি কথা বলতে, পরিচালনায় নামব এটা আগে ভাবিনি। কোনো পরিকল্পনাও ছিল না। মূলত, শেক্সপিয়ারের ‘ম্যাকবেথ’ ট্র্যাজিডির চিত্রনাট্য করার সময় ‘মন্দার’ সিরিজটির কথা মাথায় আসে। তখন মনে হলো এটা আমি পরিচালনা করতে পারি। বলতে পারেন ঘটনাক্রমে পরিচালনায় চলে এসেছি।
সংবাদ প্রকাশ: সিরিজের প্রেক্ষাপট কী এই সময়ের থাকছে?
অনির্বাণ: অবশ্যই এই সময়। সমুদ্র উপকূলবর্তী একটি অঞ্চলকে কেন্দ্র করেই চিত্রনাট্য লেখা হয়েছে। এতে নামভূমিকায় আছেন দেবাশীষ মণ্ডল। লেডি ম্যাকবেথের চরিত্রে দেখা যাবে সোহিনী সরকারকে।
সংবাদ প্রকাশ: এছাড়া স্বপন কুমারের গোয়েন্দা সিরিজ ‘বটতলার গোয়েন্দা’ পর্দায় আনছেন। পরিচালনার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় চরিত্রে আপনাকে দেখা যাবে?
অনির্বাণ: এটা এখনি বলা যাচ্ছে না। আগে চিত্রনাট্য লেখা শেষ হোক। তারপর বলতে পারব। তবে এটা বলতে পারি ‘বটতলার গোয়েন্দা’ একটি ভিন্নধর্মী সিরিজ হতে চলেছে। ব্যোমকেশ, ফেলুদার মতো বট তলার গোয়েন্দা দীপক চ্যাটার্জী সিরিয়াস গোয়েন্দা নন। তবে তিনি রহস্য অনুসন্ধানে কম যান না। পেশাদার গোয়েন্দা তিনি।
সংবাদ প্রকাশ: আপনি তো পরিচালনা শুরু করেছিলেন ‘ছোট নাটক’ দিয়ে।
অনির্বাণ: বড় নাটকও পরিচালনা করেছি, ‘চৌমাথা’ নামে। আরও বেশি করে নাটক পরিচালনা করতে চাই আমি। কারণ সেটাই আমার প্রধান ফোকাস। মুশকিল হল নাটক পরিচালনা করে তো আর জীবিকা নির্বাহ করা যায় না! আমাদের এখানে সেই ব্যবস্থা নেই। যদি বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয় টাকা-পয়সাটা টুকটাক করে জোগাড় করে ফেলা যায় তাহলে একটা সময়ে আমি শুধুমাত্র নাটক পরিচালক হিসেবেই পরিচিত হব।
সংবাদ প্রকাশ: আপনার ক্যারিয়ার পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, রহস্য-থ্রিলার ছবিতে অভিনয় করেছেন বেশি। দর্শক চাহিদায়ই কী এর কারণ?
অনির্বাণ: মানুষ এখন এ ধরনের কাজ বেশি পছন্দ করে। ওয়েব প্ল্যাটফর্মগুলো এসে সেই পালে হাওয়া দিয়েছে। আর সেকারণে খুন, রহস্য, গোয়েন্দা সিরিজ বেশি নির্মিত হচ্ছে। আমিও অভিনয় করছি। তবে এর বাইরেও আমি বেশকিছু সিনেমায় ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছি। আসলে অভিনেতাদের এক চরিত্রে পড়ে থাকলে হয় না।
সংবাদ প্রকাশ: ‘ব্যোমকেশ বক্সি’রূপে পর্দায় দেখা গেছে আপনাকে। মানুষ গ্রহণও করেছে। কখনো ‘ফেলুদা’ হতে ইচ্ছা করেনি? যতটুকু জানি ‘ফেলুদা’র প্রস্তাব আপনার কাছে গিয়েছিল।
অনির্বাণ: ‘ফেলুদা’ চরিত্রে অভিনয়ের লোভ কার না থাকে। বিশেষ কারণে চরিত্রটি করা হয়নি। তাছাড়া ‘ব্যোমকেশ’ অনির্বাণকে ‘ফেলুদা’ হিসেবে দর্শক মেনে নিতো কি না—সেটা বড় প্রশ্ন। আসলে আমি আমার নিজস্বতা সব ‘ব্যোমকেশ’-এ ঢেলে দিয়েছি, তাই ফেলুদায় নতুন করে কিছু দেওয়ার নেই বলে মনে করি।
সংবাদ প্রকাশ: দুর্গাপূজায় ‘গোলন্দাজ’ মুক্তি পাচ্ছে। দেবও আছেন ছবিতে। প্রকাশিত ট্রেলারে আপনার চরিত্রটি রহস্যাবৃত করে রাখা হয়েছে।
অনির্বাণ: দেবের সঙ্গে এটা আমার প্রথম কাজ। ওর সঙ্গে কাজ করতে পেরে ভালো লেগেছে। এই ছবিতে আমি স্বাধীনতা সংগ্রামী ভার্গবের চরিত্রে অভিনয় করেছি। এর বেশি কিছু আমি বলতে রাজি নই। তবে এটুকু বলি, আমার চরিত্রটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সংবাদ প্রকাশ: এবার ব্যক্তিগত আলাপে আসি। সংসার জীবন কেমন চলছে?
অনির্বাণ: আর দশটা বিবাহিত পুরুষের যেমন চলে তেমন। ভালো চলছে। সুখে আছি। বিয়ের পর কিছু বদল এসেছে আমার মধ্যে। সব বিবাহিত পুরুষের যা হয় আর কি!