নানা নাটকীয়তার পর জামিন পেয়েছেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। বুধবার সকাল ৯টার দিকে কারাগার থেকে বের হন তিনি। এ সময় তাকে বহনকারী গাড়ির সানরুফ তুলে সেখানে উপস্থিত উৎসাহী মানুষদের অভিবাদন জানান। তার হাতের তালুতে মেহেদী দিয়ে লেখা ছিল ‘ডোন্ট লাভ মি বিচ’।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, পরীমনি এই বার্তা কার বা কাদের উদ্দেশে? ধারণা করা হচ্ছে, সুসময়ে যারা পরীমনির পাশে ছিলেন, কিন্তু এই দুঃসময়ে দূরে চলে গিয়েছিলেন—তাদের উদ্দেশেই এই বার্তা দিয়েছেন তিনি।
গ্রেপ্তারের দিন আতঙ্কিত হয়ে পরীমনি কাছের মানুষদের সাহায্য চেয়েছিলেন। তখন কেউ তার ডাকে সাড়া দেননি। বিশেষ করে এখানে তার ‘মম’ চয়নিকা চৌধুরীও নিশ্চুপ ছিলেন। এটা নিয়ে কথা উঠলে চয়নিকা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, আইনের বিষয় হওয়ায় তিনি সেখানে (পরীর বাসায়) যাননি। তবে দূরে থেকে পরীমনির পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। যদিও সেই প্রতিশ্রুতি তিনি রাখেননি।
এছাড়া পরীমনি গ্রেপ্তার হওয়ার পর চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি তার সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত করে। তখন অভিনেত্রী অঞ্জনা বলছিলেন, “আমাদের সবারই সতর্ক হয়ে চলা উচিত। শুধু পরীমনি কেন, আমাদের পৃথিবীতে যে অস্থিরতা চলছে, সেখানে সন্ধ্যার পর একটি মেয়ের একা ঘর থেকে বের হওয়াই তো বিপজ্জনক।”
তিনি আরও বলেন, “পরীমনি আমাদের মহিলা সদস্য। সে তো জানে, সে তো বাচ্চা না। সে সাত বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে আছে। তার ব্যক্তিগত জীবন দেখার দরকার নেই। সে ঘরের ভেতর কী করে, সেটা কিন্তু আমাদের দেখার বিষয় না। কিন্তু কোনো ব্যক্তিগত কাজ কিংবা কোনো অপরাধ জনসমক্ষে চলে আসে, তখনই সেটা শিল্পী সমিতির দেখার বিষয়।”
এছাড়া পরীমনির সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন অরুণা বিশ্বাস। তিনি এক রেডিও সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “একজন শিল্পী কত টাকা মাসে আয় করলে পাঁচ কোটি টাকার গাড়ি চালাতে পারেন, চার কোটি টাকার বাড়ি কিনতে পারেন! এসব কথা বলছি, কারণ আমিও একজন শিল্পী। ১০-১২টি সিনেমা করার পর আমি গাড়ি কিনেছিলাম, তা-ও অনেক কম দামি একটা গাড়ি। অনেকে বলতে পারেন, আমি ঈর্ষান্বিত। হ্যাঁ, আমি ঈর্ষান্বিত। আমি দেখেছি, যে মেয়েটি ১০০ টাকা কনভেন্স নেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে থাকে; সেই মেয়েটি পরের বছর একটি ছয়তলা বাড়ি মালিক, সিঙ্গাপুরে ঘুরতে যায়। এই টাকা কোথা থেকে কীভাবে আসছে—এই প্রশ্ন সামাজিকভাবে কারও হয় না?”
এর আগে মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) মাদক আইনের মামলায় পুলিশ অভিযোগপত্র দাখিল না করা পর্যন্ত চিত্রনায়িকা পরীমনিকে জামিন দিয়েছেন আদালত। পরীমনির জামিন আবেদনের শুনানি করে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এই আদেশ দেন।
গত ৪ আগস্ট রাতে ঢাকার বনানীতে পরীমনির বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরদিন তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদক আইনে এ মামলা করা হয়। জব্দ তালিকায় পরীমনির বাসা থেকে ‘মদ এবং আইস ও এলএসডির মতো মাদকদ্রব্য’ উদ্ধারের কথা বলা হয়।