২০১৯ সাল। করোনাকালের ঠিক আগে-পরে মিলিয়ে ডজনখানেক ছবিতে অভিনয় করেছেন শাকিব খান। বেশির ভাগ ছবিই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। সর্বশেষ পরপর ‘লিডার আমিই বাংলাদেশ’ ও ‘প্রিয়তমা’ মুক্তি পায়। এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে ‘আগুন’ ও ‘অন্তরাত্মা’ নামে আরও দুটি ছবিতে কাজ করেছেন সুপারস্টার শাকিব খান। এই ছবি দুটির কাজ শুরুর পরও তার অনেকগুলো ছবির কাজ শুরু হয়। প্রেক্ষাগৃহে মুক্তিও পেয়েছে সেসব ছবি। কিন্তু এই ছবি দুটি এখনো মুক্তি পাচ্ছে না। কেন?
মডেল ও অভিনেতা জাহারা মিতুকে জুটি করে শাকিব খানের ‘আগুন’ ছবির শুটিং শুরু হয় ২০১৯ সালে। মাঝে প্রযোজকের ঝামেলার কারণে দীর্ঘদিন শুটিং বন্ধ থাকে। তবে বছর দেড়েক হলো ছবির সব কাজ শেষ। তবে ছবিটির মুক্তি নিয়ে কোনো তোড়জোড় নেই।
এ ব্যাপারে ছবির পরিচালক বদিউল আলম বলেন, ‘২০১৯ সালে ছবির শুটিং শুরু হলেও মাঝে প্রযোজক ঝামেলায় পড়েছিলেন। এ কারণে সে সময় বেশ কিছুদিন শুটিং বন্ধ ছিল। তবে বছর দেড়েক হলো শুটিং, ডাবিং, মিউজিকসহ ছবির সবকিছুই শেষ। শুধু শাকিবের দুটি গান বাকি।
এখন গান দুটির শুটিং শেষ করে ছবির সঙ্গে জুড়ে দিতে হবে। কিন্তু শিডিউল জটিলতায় আটকে আছে। এ সপ্তাহেই ভারতে যাচ্ছেন শাকিব। ওখান থেকে ফিরলেই গানের শিডিউল দিতে পারেন। আশা করছি চলতি বছরেই ছবিটির মুক্তির সম্ভাবনা আছে।’
পাঁচ বছর ধরে মুক্তি আটকে থাকলে ছবির গুণাবলি নষ্ট হতে পারে কি না, জানতে চাইলে খোকন বলেন, ‘অবশ্যই। শুটিং শেষ করে গরম-গরম ছবি মুক্তি দিতে পারলে যে সুবিধাটা হয়, এত সময় নিয়ে মুক্তি দিলে অনেক সময় ছবির গল্পের প্রাসঙ্গিকতা নষ্ট হয়। ছবিতে কলাকুশলীদেরও শুটিংয়ের সময়কার লুকের সঙ্গে বর্তমান লুকের ভিন্নতা দেখা যায়। এতে ছবিতে দর্শক আগ্রহও হারান, বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হয়। এই ছবির বেলায় সেই প্রভাব পড়তেই পারে।’
২০২১ সালে মার্চ মাসে শাকিব খান ও কলকাতার দর্শনা বণিককে নিয়ে ‘অন্তরাত্মা’ ছবিটির শুটিং শুরু হয়। ওই বছরই শেষ হয় শুটিং। ২০২২ সালের শুরুর দিকে এসে ছবিটি মুক্তির জন্য প্রস্তুত করা হয়। দুই বছর হতে চলল, মুক্তি পাচ্ছে না ছবিটি।
এ ব্যাপারে ছবির পরিচালক ওয়াজেদ আলী বলেন, ‘সেন্সরে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে বসে আছি। কিন্তু সেন্সরে দেওয়া হচ্ছে না। ফলে মুক্তিও পাচ্ছে না ছবিটি।’
পরিচালক জানান, প্রযোজকই ছবিটি মুক্তি দিচ্ছেন না। সুমনের ভাষ্য, ‘প্রযোজকের কোনো সমস্যা হয়েছে হয়তো। তা না হলে ছবিটি আটকে রাখার তো কোনো মানে নেই। অনেক দিন থেকেই প্রযোজকের কাছে ছবিটি মুক্তির ব্যাপারে তাগিদ দিয়ে আসছি। গত মাসেও প্রযোজকের সঙ্গে এ বিষয়ে একবার কথা হয়েছে। প্রযোজকের একটাই কথা, সময়মতো মুক্তি দেওয়া হবে। কিন্তু সেই সময় কবে আসবে?
এই পরিচালকের ভাষ্য, যতই সময় যাচ্ছে, ছবিটির ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। যদিও গল্পের সমস্যা নেই। তারপরও আমার কাছে মনে হচ্ছে, ছবিটি দর্শকের আগ্রহ হারাচ্ছে। চারপাশে ছবিটির যে আলোচনা উঠেছিল, তা থেমে গেছে। ছবিটি পুরোনো হয়ে যাচ্ছে। ছবিটি অনেক ভালো হয়েছে, কিন্তু আটকে থাকার কারণে ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।’